‘যমুনা সম্প্রদায়’-এর গল্পের শুরু ক্যাপিটল অব দ্য ওয়ার্ল্ড নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন ডাইন রেস্তোরাঁয়। পদার্থ বিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণি পাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বর্তমানে উডসাইডে বসবাসরত মাহা প্রায় দু’যুগ পর হঠাৎ করেই দেখা পেলেন ১৯৭১ সালে কামালপুর যুদ্ধের হিরো শাহজাদের। শাহজাদ মাহার কাছে একদিন শুধু তার টিনএজ প্রেম ছিল না―তাঁর মধ্য দিয়ে সে ভালোবেসেছিল বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামকেও। শরীরে যুদ্ধের ক্ষত নিয়ে তার ভালোবাসার মানুষ যখন পুনের হাসপাতালে তখন অবিশ্বাস্য নাটকীয়তায় মাহার জীবনে আসে মওদুদ। একদিন হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে মওদুদের মহাপ্রস্থানও ছিল একই রকম নাটকীয়। সুদীর্ঘ ত্রিশ বছরের পটভূমিতে লেখা জীবন ও প্রকৃতি ঘনিষ্ঠ এই এপিক উপন্যাসের মুখ্য মুখ শাহজাদ ও মাহা দু’জনেরই কাছের মানুষ হিম্মত সরকার―যার লাইফ-টাইম মিশন ইউএস ক্রুগ মিশনের সুপারিশে করা পরিবেশ অবান্ধব যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বাঁধ গুড়িয়ে দেওয়া―যমুনা সম্প্রদায়ের আরেক তেজী চরিত্র। ইকতিয়ার চৌধুরী একাত্তরের কিশোর গেরিলা―উত্তর বাংলার গ্রাম থেকে যিনি এক পোশাকে একদিন প্রবেশ করেছিলেন ঢাকায়―অত্যন্ত বিশ্বস্ততায় যমুনা সম্প্রদায় নির্ভর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যবাদী এই উপন্যাসটি নির্মাণ করেছেন ইংল্যান্ডের প্রবাস জীবনে। বাংলা সাহিত্যের বিষয়ভান্ডারে তা একেবারেই নতুন সংযোজন।
ইকতিয়ার চৌধুরী সত্তরের শেষ প্রান্ত হতে গদ্য লিখছেন। প্রথম প্রকাশিত গল্প দৈনিক বাংলার সাহিত্য পাতায়। উপন্যাস, গল্প, ভ্রমণকাহিনীসহ প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ২০।উল্লেখযোগ্য বই- রামকৃষ্ণ মিশন রোডে বসন্ত, যমুনা সম্প্রদায়, র্স্বণকন্যা ইমিগ্র্যান্ট, সমতটের স্বর এবং স্বশাসনের শিশুকাল। দশ প্রান্ত দশ দিগন্ত তাঁর প্রথম ভ্রমণসমগ্র। কূটনীতিবিদি। পেশাগত জীবনে র্সবশেষ স্পেনে রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘের বিশ্ব র্পযটন সংস্থায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। ২১ ফেব্রুয়ারি আর্ন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি অর্জনে ইউনেস্কো সদর দপ্তর প্যারিসে বাংলাদেশের উপস্থায়ী প্রতিনিধি থাকাকালীন কূটনৈতিক লড়াইয়ের ঘনিষ্ঠ অংশীদার। মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধকালে তিনি ছিলেন উত্তর বাংলার বৃহত্তম গেরিলা বাহিনী পলাশডাঙা যুব শিবিরের সহকারী কোষাধ্যক্ষ। জন্ম ডিসেম্বর ১৯৫৪, সিরাজগঞ্জ। পিতা তৎকালীন র্পূব পাকিস্তানের প্রথম আধুনিক কবিতার সংকলন ‘নতুন কবিতার কবি প্রয়াত চৌধুরী ওসমান। মাতা প্রয়াত হামিদা সুলতানা। বিবাহিত। স্ত্রী লীনা চৌধুরী সাবকে শিক্ষিকা। তাঁরা যুক্তরাজ্য প্রবাসী প্রকৌশলী দু’পুত্ররে জনক-জননী।