আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে আফ্রিকার নেগ্রিটো গ্রুপের চারটি উপজাতি গোত্র বাস করে। গ্রেট আন্দামানিজ, ওঙ্গি, জারোয়া ও সেন্টিনালিজ। নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বাস করে দুইটি মঙ্গোলয়েড গোত্র-শম্পেন এবং নিকোবারিজ। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর এই দ্বীপে একটি কারা কলোনি স্থাপন করে, যেখানে বন্দীদের আটকে রাখা হতো। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে গ্রেটার আন্দামালিজ বাহিনীর সঙ্গে প্রথম লড়াই হয় ১৮৫৯ সালে, তারপর শুরু হয় তাদের নিজেদের বশে আনার পালা। তার ফলশ্রুতি এই হয়েছে যে তারা আজ প্রায় নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। এদের মধ্যে জারোয়ারা বন্ধুত্ব স্থাপন করলেও এখনও নিজেদের সংস্কৃতি, রীতিনীতি ও স্বাধিকার বজার রেখেছে। কিন্তু নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপের বাসিন্দা সেন্টিনালিজরা আজও সভ্য পৃথিবীকে তাদের তল্লাটে ঢুকতে দেয়নি। যারাই ওই দ্বীপে নামার চেষ্টা করেছেন তাদের নির্মম মৃত্যু হয়েছে ওই জনজাতির হাতে। ফলে ওই দ্বীপের মধ্যেটা কেমন বা ওই জনজাতি কীভাবে সেখানে বসবাস করে তা অনেকটাই অজানা। ভারত সরকার নিয়ম করে ওই দ্বীপে নামা বা ওই জনজাতির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা বন্ধ করে দিয়েছে। অমিত গোস্বামী সাহিত্যিক হলেও নৃতত্ত্ব নিয়ে মাস্টার্স করে, আন্দামানের আদিবাসী ছিল তার উৎসাহের ক্ষেত্র। গবেষণাধর্মী কিছু কাজ করার জন্যে তিনি কয়েকবার পোর্ট ব্লেয়ার গেছেন। সাক্ষাৎ হয়েছে জারোয়াদের সাথে। বিভিন্ন তথ্য ও গল্প জমে ছিল তার ঝুলিতে। অন্যান্য নৃতাত্ত্বিকদের অভিজ্ঞতা ও নিজের অভিজ্ঞতার মিশেলে রচিত হয়েছে এই গ্রন্থ।