আমি বললাম, এখন কী হবে আপা? আপা বললেন, খোকন তোর সোয়েটারটা খুলে দে। শীতে বাচ্চাটা একেবারে বরফ হয়ে আছে। যেভাবেই হোক ওকে বাঁচাতে হবে। রিকশাওয়ালা ভাই, আরেকটু জোরে চালান। আমি আমার শরীর থেকে সোয়েটারটা খুলে বাবুকে জড়িয়ে দিলাম। এ সময় মোনালিসা আপা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন। আপার অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে এটা ওনার নিজের বাচ্চা। আপার কান্না দেখে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম যেকোনো মূল্যে বাচ্চাটাকে বাঁচাতেই হবে। আমাদের রিকশা ছুটছে হাসপাতালের দিকে। রিকশাওয়ালা একটু বয়স্ক। যদিও প্রাণপণে চেষ্টা করছে তবু দ্রুত টানতে পারছে না। আমি আপাকে বললাম, আপা বাবুকে শক্ত করে ধরে রাখুন। আমি নেমে ধাক্কা দিচ্ছি। তাতে রিকশার গতি বাড়বে। রিকশা থেকে নেমে এলাম। হঠাৎ দেখি পিছন থেকে কে যেন ডাকছে। ভালো করে খেয়াল করতেই বুঝলাম এটা শামীমের গলা। শামীম রিকশার পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে আমাদের ধরে ফেলল। কৈফিয়ত দেবার মতো করে বলল, সরি আপা, যদি কোনো কাজে লাগি। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে যাই। আমি বললাম, এত কথা বলছিস কেন? আমার সাথে আয়। জোরে ধাক্কা লাগা। বাবুর অবস্থা ভালো না। দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। আমার কথা শেষ হতে না হতেই ছোট বাবু বমি করে ভাসিয়ে দিল। সাথে প্রচণ্ড কাশি। আপা এবার হাউমাউ করে কেঁদে ফেললেন। মোনালিসা আপা রিকশাওয়ালাকে অনুনয় করলেন, প্লিজ আরেকটু জোরে টানুন ভাই; আপনার পায়ে পড়ি।