পৃথিবীর ইতিহাসে জ্ঞানের অন্যান্য শাখার মতই গণিতের বিকাশে অবদান রেখেছে বিভিন্ন সভ্যতার, বিভিন্ন সময়ের মানুষ। আমরা প্রাচীন সময়ের যতগুলো বড় বড় সভ্যতার কথা জানি- মিশর, ব্যবিলন, চীন, কিংবা ভারত- তাদের সকলেই নিজেদের মত করে বুঝতে শিখেছে তাদের আশেপাশের জগতটাকে। রাতের আকাশে তারাদের গতিপ্রকৃতি বোঝা, ঋতু পরিবর্তনের চক্রকে অনুধাবন করা, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিমাপ করার মত কাজগুলো ঠিকঠাক করতে না পারলে নিশ্চয়ই সুবিশাল পরিসরের সেই সভ্যতাগুলো শত শত বছর ধরে টিকে থাকতে পারতো না। আসমুদ্রহিমাচলবিস্তৃত ভারতীয় উপমহাদেশে বেড়ে ওঠা সভ্যতায় গণিতের ধারণা ও ভাবনা কেমন করে বিকশিত হয়েছে, আমাদের পূর্বপুরুষেরা আধুনিক গণিতের বিকাশে কী অবদান রেখেছেন- সেই ইতিহাসের খোঁজ করার চেষ্টা করা হয়েছে এই বইতে। খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীর বৈদিক সভ্যতায় জ্যামিতির মৌলিক ধারণা থেকে শুরু করে ষোল শতকের দক্ষিণ ভারতে অসীম ধারার বিকাশ- এই দুই হাজার বছরের গণিতের ইতিহাস সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে এই বইতে। তবে দিন-তারিখের বিবরণী নয়, এই ইতিহাস আলোচিত হয়েছে গণিতের ধারণাকে কেন্দ্র করে, তুলে ধরা হয়েছে আনুষঙ্গিক সামাজিক প্রেক্ষাপট আর গাণিতিক অনুজ্ঞার বিস্তারিত বিবরণ।
অভীক রায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে তড়িৎ কৌশল বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়, অস্টিনে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে পিএইচডি করছেন। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাথে যুক্ত আছেন ২০০৮ সাল থেকে, সেখানে একাডেমিক সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করেছেন ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত। পূর্বে প্রকাশিত গ্রন্থ: ম্যাথােস্কোপ (২০১০), সংখ্যার সাতকাহন (২০১৪)। এছাড়াও সহলেখক হিসেবে লিখেছেন জ্যামিতির দ্বিতীয় পাঠ, গণিতের রাজ্যে পাই, বিডিএমও প্রস্তুতি।