এটি একটি রোম্যান্টিক উপন্যাস বর্তমান সমাজ ব্যাবস্থার প্রেক্ষিতে লেখা । বাবা-মা, ভাইবোনদের চোখ এড়িয়ে একজন কিশোরি মেয়ের ভুলে ভরা ভালবাসার গল্প ; অন্যদিকে একজন তরুণের অসুস্থ্য মানসিকতা নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম । তাঁদের এই ভালোবাসাকে প্লেটোনিক লাভ বলা যাবেনা বরং একে শরীর সর্বস্ব ভালবাসা বলা যায় । সারা পৃথিবী এখন নিমজ্জিত অস্থিরতা নামক অশুভ প্রতিযোগীতায় । এটি এমন এক প্রতিযোগিতা যেখানে ‘হার’শব্দটা থাকতে নেই,সবাইকে জিততে হবে, এগিয়ে যেতে হবে অন্যদের ছাড়িয়ে সেটা যে পদ্ধতিতেই হোক না কেন । এই খেলার একটাই নিয়ম শুধুই সামনে এগিয়ে যাওয়া, এখানে মাঝামাঝি কোন পথ নেই, তাই পরম আত্মীয়ও হয়ে যাচ্ছে চরম শত্রু, কে কাকে ল্যাঙ মেরে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করবে সেই প্রমত্ত খেলায় ভেসে গিয়েছে আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধগুলো । দু-একটি পরিবার যদিও কিছুটা লালন করছে, কিন্তু চলমান প্রক্রিয়ায় সেই মূল্যবোধকে সঠিক ভাবে ধরে রাখতে পারছে কই? বিশ্বায়নের ফলে প্রতিযোগিতামূলক অস্থির সমাজে টিকে থাকতে যেয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো হয়ে যাচ্ছে টাকা তৈরির মেশিন । চাল- ডাল-তেল-নুন-চিনির হিসেব করতে যেয়ে কর্তাগিন্নি দুজনেই এখন মহা ব্যাস্ত ফলে সন্তান সারাদিন কি করছে, কার সাথে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে সেটা দেখার সময় কোথায়? উচ্চ মধ্যবিত্ত্/ উচ্চ বিত্তদের সমস্যা আরো বেশী, সন্তানকে দামী প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না পড়ালে স্ট্যাটাস থাকে না । ভালো প্রাইভেট টিউটর রাখতে হচ্ছে প্রতিটি বিষয়ের জন্য না হলে প্রথম হওয়া যাবে না! শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম হবার সার্টিফিকেট হলেই যেন আর কিছু দেখবার প্রয়োজন নেই । সন্তান মিথ্যাবাদী হোল, না কি তাঁর চরিত্রে স্খলন হয়েছে সেটা দেখবার মত চিন্তা শক্তি আর এখন বাবা মায়েদের নেই । আমাদের সমাজ ব্যাবস্থায় এখনো সন্তানদের নেতীবাচক কিছু হলে তার দায় কিন্তু মায়েদের উপরেই বর্তায় হোক না সে মা কর্মজীবী । কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, আমাদের বেশিভাগ মায়েরা এখনো সন্তানদের অন্ধভাবে বিশ্বাস করে, খতিয়ে দেখেনা তাঁর কিশোরী মেয়েটি ক্লাসে প্রথম হলেও সারাদিন সে আর কি কি করে, কিংবা কলেজে পড়ুয়া ছেলেটি হাত খরচের টাকায় নেশা করছে কিনা, মাঝরাত পর্যন্ত জেগে গ্রুপ স্টাডির বদলে পর্ণ দেখছে কি না ; জড়িয়ে যাচ্ছে কি না সমাজবিরোধী কোন কর্মকাণ্ডে ।
১৯৬৯ সালের ৭ই ডিসেম্বর ঢাকায় জন্ম। স্কুল ম্যগাজিনের মাধ্যমে লেখালেখিতে আসা। ‘সাপ্তাহিক রোববার’-এ প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। এরপর বিভিন্ন ম্যগাজিন, অনলাইন পত্রিকায় আর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে লেখালেখিতে যুক্ত হন তিনি। প্রথম উপন্যাস “অপেক্ষা অযুত বছর” প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালের বই মেলায় নন্দিতা প্রকাশ থেকে । বাবা প্রয়াত আমজাদ আলী আহমাদ ছিলেন প্রকৌশলী আর মা রাজিয়া আহমেদ একজন গৃহিণী। ফারিদা আহমদ নিকু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে এম এ করেন, তারপর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম বি এ (মানব সম্পদ) এবং হিউমেন রাইটস ল’-তে মাস্টার্স করেন। বাংলাদেশ ইনসটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে পারসনেল ম্যানেজমেন্ট এ ডিপ্লোমা করেন ও সিঙ্গাপুর ইনসটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে প্রশিক্ষণ নেন । ব্যক্তিগত জীবনে স্বামী আখতার আহমেদ, ছেলে আবরার আহমেদ (কাব্য) আর মেয়ে তাঞ্জিম নাওয়ার কাঙ্ক্ষিতাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিচরণ এস এস সি পরীক্ষার পর থেকে। আশির দশকের শেষ ভাগ থেকে নব্বই দশকের মাঝামঝি পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা আর নাটকে অভিনয় করেছেন। মঞ্চ নাটক আর স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে জড়িয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে নব্বইয়ের শুরুতে। “ধুপদ নৃত্যকলা”-র ছাত্রী ছিলেন ও “বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক দল” এর সদস্য হয়ে ২০১০ সালে “বেইজিং ড্যান্স ফেস্টিভ্যালে” যোগ দেন। কর্মজীবনে ডানকান ব্রাদার্স (বাংলাদেশ) লিমিটেড এর মানব সম্পদ বিভাগে কর্মরত আছেন । পছন্দ : লেখালেখি, ঘুরে বেড়ানো, সাঁতার কাটা, বই পড়া আর আড্ডা দেয়া ।