পৃথিবীর মানচিত্রে একটি নতুন দেশ। সাড়ে সাত কোটি মানুষ-একটি জাতি। দুর্জয়, দুর্বিনীত, সংগ্রামী চেতনায় অগ্নিফলকে খোদিত একটি নাম। কোটি কোটি মানুষের অন্তহীন ভালোবাসা আর অগাধ বিশ্বাসের দুর্লভ ঐশ্বর্যে গড়া এক অনুপম ইতিহাস। প্রতিটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে থাকে অনেক আত্মত্যাগের ইতিহাস। স্বাধীনতার জন্য রক্ত, জীবন, সম্ভ্রম দিতে হয়। দীর্ঘ লড়াই– সংগ্রাম করতে হয়। একাত্তরের মার্চ মাসকে আমরা বলি উত্তাল ও আগুন ঝরা মাস। সেই সময়ে কত নারী তার সম্ভ্রম হারিয়েছে তার কোনো লেখিত তথ্য কোথাও সংগ্রহ করা নেই। যা আছে তাও ছিঁটে ফোঁটা এমনই এক বীরাঙ্গনাকে নিয়ে রানু হাফিজ লিখেছেন এই বইটি। বইটির পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে একজন নারী, একজন বীরাঙ্গনার কষ্ট, কান্না যন্ত্রণার কথা। এই সব যন্ত্রণাকে উপেক্ষা করে তিনি কীভাবে উঠে এসেছেন সেই গল্প। এই শিমুল তুলোর মতো, নিরুদ্দেশ হাওয়ায় হাওয়ায় উড়তে থাকা, ভাসতে থাকা জীবনে। এই জীবনে মানুষ কোথায়, কার সঙ্গে জড়াবে তা কী সে জানে নিজেও? সম্ভব কী তা জানা? জীবন তো এমনই। এক জীবনে পরিবর্তন একবার নয়, বারবার আসে, আসবেই। নদীর বাকের মত জীবন গতিও মান হয়ে ছুটে বেড়াবে। ‘জেসমিন একটি ফুলের নাম ' উপন্যাসটি এক সদ্য কিশোরী বীরাঙ্গনার না বলতে পারা জীবনকথা। দলিত মথিত বঞ্চিত কীটদষ্ট কিশোরীর কুঁড়ি থেকে ফুল হয়ে ওঠার গল্পকথা। লেখক ১৯৭১ সালে তার দেখা প্রকৃত ঘটনা এবং তার কল্পনা দিয়ে জেসমিনকে তার ক্যনভাসে অংকন করেছেন। আমরা লেখকের এই নির্মাণ এবং লেখকের জয়যাত্রা কামনা করতেই পারি।