মফস্বল শহরে নানা প্রতিকূল পরিবেশে বেড়ে উঠা এক নারী নার্গিস চৌধুরী। তার দৃঢ়চেতা চরিত্র দেখে, কীভাবে তিনি নারী উদ্যোক্তা হয়েছেন এবং সমাজের অবহেলিত নারীদের উঠে দাড়াতে সাহায্য করেছেন, নারী উদ্যেক্তা তৈরি করেছেন, এবং নার্গিসকে লেখা একজনের হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসার চিঠি পড়ে- তাকে নিয়ে বই লেখার প্রেরণা পান আনিকা বানু নামে নবীনগরের এক তরুণী, যে নিজে শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে নার্গিসের প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হন। নার্গিস গ্রামের সবার কাছে দাদুন নামে পরিচিত। এই নার্গিস শৈশবে চঞ্চলা হরিণীর মত ঘুরে বেড়াতেন, পাড়ার সবাই তার দুষ্টুমিতে তটস্থ ছিল। একসময়ে তার ভালোবাসার মানুষ ভারতে চলে গেলে তিনি বদলে যেতে থাকেন। পড়াশোনায় মনোযোগী হন। সময় মানুষকে বদলে দেয়, দেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাবাকে হারিয়ে নার্গিসের পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। এ সময়ে পরিবারের বড়ো কন্যাটি তিনটি অবুঝ সন্তান রেখে স্বামীসহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। বিধবা মা ঘরে সেয়ানা সুন্দরী মেয়ে নার্গিসকে নিয়ে তিনটি এতিম সন্তানকে লালনপালন করতে থাকেন। নারগিস নিজে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বোনের ছেলেমেয়েদেরকে মানুষ করতে লেগে গেলেন। মাও একসময় চলে গেলেন এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে। পাড়াপ্রতিবেশীর নানারকম মানসিক নির্যাতন ও পাড়ার বখাটে ছেলেদের অত্যাচার সহ্য করে তিনটি ছেলেমেয়েকে আঁকড়ে ধরে চলে নার্গিসের জীবন। তার ভালোবাসার মানুষ কার্তিকদা প্রবাসে বসবাস করেও মাথার উপর ছায়া হয়ে সবসময় নার্গিসকে বেঁচে থাকার সাহস যুগিয়েছেন। একটি মেয়ের দুঃসহ পরিবেশে বেড়ে উঠা ও তার মিষ্টি প্রেমের কাহিনী নিয়ে সাজানো হয়েছে নীলখাম। নীলখাম সবার জীবনে আছে, আছে শৈশবের মিষ্টিমধুর গল্প, সেসব নিয়ে মানুষের বেচে থাকা, মানুষের পথ চলা।