গন্তব্যের নেশা’ বইটিতে রয়েছে একটি কবিতা। দীর্ঘ টানা কবিতা। কবি শামীম রফিক এর আগেও দীর্ঘ টানা গদ্য কবিতা লিখেছেন। কবিতাটিতে রয়েছে একটি জীবনের টানা-পোড়েন, ভুল, ব্যর্থতা-ফলত পরাজয়ের পাশাপাশি একটি সফলতার কাহিনি। আবেগ, অভাব, ব্যর্থতা ও অসময় কবিতাটিকে ভিন্নতা দিলেও রয়েছে প্রচণ্ড প্রাপ্তির কাহিনি। কবিতাটির রূপবিন্যাস ও গঠনশৈলি অত্যন্ত নিপুণ হস্তে বিনির্মিত। কাব্যিকতায় পূর্ণ কবিতাটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে শিল্পমাধুর্য ও সুরভিত মধুরিমা। সহজ কথনে নির্মিত কবিতাটি শিল্পরূপ, শাব্দিকবিন্যস্ততা ও উপমায়ন নানা কূহকে সজ্জিত। কবিতাটিতে প্রকরণগত ভিন্নতার পাশাপাশি রয়েছে শৈলিগত বহুমূখিনতা। উপমার আড়ালে যেমন রয়েছে কুহেলিকা, তেমনি কুহেলিকার মাঝে রয়েছে রূপগত গল্পকথা। কবিতাটি ব্যক্তি ছাড়িয়ে যেমন পেয়েছে বিশজনিনতা, তেমনি নির্দিষ্টতা ছাড়িয়ে হয়েছে মানব মুক্তির সনদ। জীবনের কদর্যকে মন করে দিয়েছে প্রেমের সবিশেষ উপাখ্যান। নীল ও লাল রঙের মিশ্রিত মৌতাঁত বেনারসি প্রেমকে দিয়েছে ছান্দিক ও মধুময় গোপনীয়তায় মোড়া অপরূপ সম্ভার। সময় জীবনকে স্থির করেনি, দিয়েছে গতিময়তা ও মধুরতা। গন্তব্যমুখী প্রেম সকল ট্টাজেডিকে ধারণ করেছে, করেছে শিল্পিত শাসন ও ব্যবচ্ছেদ। কষ্ট ও হতাশাগুলো কর্পূরের মতো সাধারণে বিমোহিত ও বিতাড়িত। ভালোবাসায় কৈফিয়ত ধারণ করে প্রেম হয়েছে শিল্পমণ্ডিত। স্থির গন্তব্যের নেশায় ভালোবাসা কখনো ধূসরিত বা ফ্যাকাশে হয়নি বরং নীল রঙ হয়েছে জীবনের রূপক। ‘গন্তব্যের নেশা’ কাব্যগ্রন্থটি কবি শামীম রফিকের নব চেতনায় পূণর্জন্মের নবতর-আখ্যান।
জন্ম ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন। মূলত কবি। লেখেন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, গবেষণা, আলোচনা-সমালোচনা, কলাম ইত্যাদি। বর্তমানে গবেষণার প্রতি বেড়েছে বিশেষ মনোযোগ। তিনি ‘অরণ্য’ নামক একটি মুক্তকাগজ সম্পাদনা করে আসছেন সেই ১৯৯৭ সাল থেকে। প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু গ্রন্থ। তিনি সাহিত্য পত্রিকা, দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকার নিয়মিত লেখক।