রাত অনেক গভীর। হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙে গেল। আমার শরীর অসাড়। নড়তে পারছি না একদম। গলা দিয়ে কথাও বের হচ্ছে না। ভেন্টিলেটর দিয়ে মৃদু আলো ঢুকছে রুমের মধ্যে। সোফার দিকে অনেক কষ্টে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম। সোফায় আমার বউ নাই। অজানা আশঙ্কায় বুক আঁতকে উঠলো। ভেতরে ভেতরে ছটফট করতে করতে কীভাবে জানি, ঘুমের দানব আমাকে আবার গ্রাস করে নিলো। আমি হারিয়ে ফেললাম চেতন। মিন্টু খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছে কথাগুলো। কোনো হ্যাঁ হুঁ কিছুই করছে না। ছেলেটা বলেই যাচ্ছে এদিকে। তার পরের দিন আমার ঘুম ভাঙলো খুব বেলা করে। ঘুম ভেঙে দেখি আমার ফ্যাক্টরির কিছু কলিগ বিষণ্ন হয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। খুব শোরগোল হচ্ছে। আমি তখনো নড়তে পারছি না। কিছু বলতে পারছি না। জিহ্বায় কে যেন পেরেক গেঁথে রেখেছে। ইশারায় কী হয়েছে জানতে চাইলে যা শুনলাম, তার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। আমার আদরের বউ নাকি আত্মহত্যা করেছে। ক্লিনিক থেকে চার পাঁচ মিনিটের পায়ে হাঁটা পথ। সদ্য তৈরি হয়েছে দালানটি। ছয় তলা বিল্ডিং। সেই বিল্ডিঙের নীচে নাকি পাওয়া গেছে তার লাশ। বাইশ বছরের জীবনের যত কান্না জমিয়েছিলাম চোখে, সব ঝরে গেল মুহূর্তের মধ্যে আমার চোখ দিয়ে। আমার আর্তনাদে ভারি হয়ে গেল গোটা ক্লিনিক। শরীরের এমন অবস্থা ছিল যে, শেষবারের মতো বউটাকে দেখতেও পেলাম না। একজন মোবাইলে ছবি তুলে এনেছিল। একবার দেখতে চেয়েও দেখতে পারিনি ঠিকমতো। খুব বীভৎস সেই ছবি। মিন্টুর আগ্রহ বেড়ে গেল। রহস্য মিন্টুর খুব প্রিয়। ছেলেটার গল্প মিন্টুকে ভাবিয়ে তুলছে। মিন্টু জিজ্ঞেস করল, তারপর?