স্বায়ত্তশাসন, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা গ্রন্থের মূল উপজীব্য বাংলাদেশের ইতিহাস (আগস্ট ১৯৪৭ মার্চ ১৯৭১)। ১৪ আগস্ট ১৯৪৭। মধ্যরাত্রি। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ রাজত্বের অবসান ঘটে রক্তপাত, পারস্পরিক ঘৃণা ও ধর্মীয় ছলনাময়ী তথাকথিত দ্বিজাতিতত্তে¡র ভিত্তিতে। সৃষ্টি হয় ধর্মরাষ্ট্র পাকিস্তান। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ভারত। বিভক্ত হয়ে পড়ে বিশাল বাংলা হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর এবং বিন্ধ্যপাহাড় থেকে পূর্বপ্রান্তশায়ী পার্বত্য অঞ্চলের আধিপত্য ও বিন্ধ্য- হিমালয় বাহুবিধৃত ভূখন্ড টি। এর সঙ্গে বিচিত্রবৈচিত্র্য মাটিঘেঁষা বাঙালি সংস্কৃতি ও গঙ্গা-পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-বরাকের ঐতিহ্য। ধর্মরাষ্ট্র পাকিস্তানের জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শুরু হয় বাঙালির বিপ্লববিদ্রোহ। চলে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও বাংলাভাষা আন্দোলন। বাঙালি দ্বিধাহীনভাবে তার মতামত প্রকাশ করে ১৯৫৪ ও ১৯৭০-এর নির্বাচনে। ১৯৬৯-এর গণ অভ্যুত্থানেও। অবশেষে, বাঙালির অফুরন্ত রক্তক্ষয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তীব্র গণযুদ্ধ, গেরিলাযুদ্ধ এবং প্রত্যক্ষ মুক্তিযুদ্ধ। বাঙালি জাতি গঠনে স্বায়ত্তশাসন, স্বাধিকার ও স্বাধীনতার ইতিহাস (আগস্ট ১৯৪৭Ñমার্চ ১৯৭১) অপরিহার্য। স্বায়ত্তশাসন, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা গ্রন্থে অর্থনৈতিক -সামাজিক-রাজনৈতিক বিশ্লেষণ-পর্যালোচনা-গবেষণা-তথ্য ও সহজপাঠ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস (আগস্ট ১৯৪৭মার্চ ১৯৭১) অনুধাবনের চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিহাসের কলেবর অযথা বৃদ্ধি না করে, গবেষণা ও উপযোগী তথ্য নির্দিষ্ট পরিধির মধ্যে সীমিত রেখে, প্রয়োজন অনুযায়ী ও নির্বাচিত ঘটনাবিষয়ের ওপর যথোপযুক্ত গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। স্থান-কাল-দেশের পরিপ্রেক্ষিতে, লেখকের সমকালীন ইতিহাসের ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ- পর্যালোচনা-গবেষণার ক্ষেত্রে তাঁর পারঙ্গমতা প্রশ্নাতীত। তাঁর অভিজ্ঞতা, সংস্কাররুচিপ্রবণতা, তথ্যসংগ্রহ ও বিচারবিশ্লেষণব্যাখ্যা এই গ্রন্থটির মূল্য ও মর্যাদাকে অন্যস্তরে উন্নীত করেছে। এখানেই স্বায়ত্তশাসন, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা গ্রন্থটির অভিনবত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব।
Title
স্বায়ত্তশাসন, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা (আগস্ট ১৯৪৭- মার্চ ১৯৭১)
জন্ম : ১লা মার্চ ১৯২৯। মুকিমপুর গ্রাম, হবিগঞ্জ। মৃত্যু : ২৩ ফেব্র“য়ারি ১৯৯৬। স্কাউট ভবন, হবিগঞ্জ সদর। হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে বি.এ শেষ বর্ষ সমাপ্তির পূর্বেই আউশকান্দি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগদান। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে সপরিবারে পাকিস্তানে বসবাস শুরু। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে বিমান বাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নিয়ে সপরিবারে দেশে প্রত্যাবর্তন। ১০ জানুয়ারি ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনে পৌঁছানো ও পরে ব্রিটিশ সরকারের এরোপ্লেন গবেষণা কেন্দ্রে স্পেশাল গ্রেডের চাকরিতে যোগদান। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ক্রমাগত পেশা বদল। ম্যানেজার, ইলেকট্রিক, মিস্টি, ফিটার। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ থেকেই তিনি তাঁর বিচিত্র জীবনের অভিজ্ঞতা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখতে শুরু করেন। আবদুর রউফ চৌধুরীর প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত অসংখ্য উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, সাহিত্য ও রচনাসম্ভার বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।