ভূমিকা ঠাকুরমার ঝুলির মতো এত বড় স্বদেশি জিনিস আমাদের দেশে আর কী আছে? কিন্তু হায় এই মোহন ঝুলিটিও ইদানীং ম্যানচেস্টারের কল হইতে তৈরি হইয়া আসিতেছিল। এখনকার কালে বিলাতের "Fairy Tales" আমাদের ছেলেদের একমাত্র গতি হইয়া উঠিবার উপক্রম করিয়াছে। স্বদেশের দিদিমা কোম্পানি একেবারে দেউলে। তাদের ঝুলি ঝাড়া দিলে কোনো কোনো স্থলে মার্টিনের এথিকস ও বার্কের ফরাসি বিপ্লবের নোটবই বাহির হইয়া পড়িতে পারে, কিন্তু কোথায় গেল---- রাজপুত্র পুত্তরের পুত্র, কোথায় ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমি, কোথায়-সাতসমুদ্র তেরো নদী পাড়ের সাত রাজার ধন মাণিক! পাল পার্বণ যাত্রা গান কথকতা এসবও ক্রমে মরা নদীর মতো শুকাইয়া আসাতে, বাংলাদেশের পল্লিগ্রামে যেখানে রসের প্রবাহ নানা শাখায় বহিত, যেখানে শুষ্ক বালু বাহির হইয়া পড়িয়াছে। ইহাতে বয়স্ক লোকদের মন কঠিন স্বার্থপর এবং বিকৃত হইবার উপক্রম হইতেছে। তাহাদের স্বায়ংকালীন শয্যাতল এমন নীরব কেন? তাহাদের পড়াঘরের কেরোসিন্-দীপ্ত টেবিলের ধারে যে গুঞ্জনধ্বনি শোনা যায় তাহাতে কেবল বিলাতি বানান-বহির বিভীষিকা। মাতৃদুগ্ধ একেবারে ছাড়াইয়া লইয়া কেবলি ছোলার ছাতু খাওয়াইয়া মানুষ করিলে ছেলে কি বাঁচে! কেবলি বইয়ে কথা! স্নেহময়ীদের মুখের কথা কোথায় গেল! দেশলক্ষ্মীর বুকের কথা কোথায়! এই যে আমাদের দেশের রূপকথা বহুযুগের বাঙালি-বালকদের চিত্তক্ষেত্রের ওপর দিয়া অশ্রান্ত বহিয়া কত বিপ্লব, কত রাজ্য পরিবর্তনের মাঝখান দিয়া অক্ষুণ্ন চলিয়া আসিয়াছে, ইহার উৎস সমস্ত বাংলাদেশের মাতৃস্নেহের মধ্যে। যে স্নেহ দেশের রাজ্যেশ্বর রাজা হইতে দীনতম কৃষককে পর্যন্ত বুকে করিয়া মানুষ করিয়াছে, সকলকেই শুক্ল সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ দেখাইয়া ভুলাইয়াছে এবং ঘুমপাড়ানি গানে শান্ত করিয়াছে, নিখিল রঙ্গদেশের সেই চির পুরাতন গভীরতম স্নেহ হইতে এই রূপকথা উৎসারিত।
মো: বশির আহাম্মদ ১৯৭৩ সালে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলাধীন উত্তর বাটামারা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। পূর্ব কুড়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবন শুরু। বোরহানউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও আবদুল জব্বার মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাশ করেন। বরিশাল ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে স্নাতক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে বি কে এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইতিপূর্বে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বোরহানউদ্দিন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।