সব মানুষের মধ্যেই স্বপ্ন, কল্পনা, ভাবনা, আবেগ, অনুভূতি, উপলব্ধি এবং চিন্তাসহ একটি কবিমন বিরাজ করে। কিন্তু সবাই তো আর প্রকাশ করতে পারেন না, কেউ কেউ পারেন। এই মানবিক বিষয়গুলো উপমা, উৎপেক্ষা, চিত্রকল্প ইত্যাদিসহ অপরিহার্য শব্দের মালা গেঁথে মনোরমভাবে যিনি প্রকাশ করতে পারেন তিনিই কবি। কবির এ প্রকাশ পাঠকের মর্ম স্পর্শ করে। কবির এ কথামালা সর্বজনীন ও সর্বকালীন হলে তিনি সার্থক হন। পাঠক কবির এই শব্দমালা পড়ে আনন্দ পান। ভালো কবিতা যখন কোনো শিল্পী সকলের মর্মে তার আকর্ষণীয় দক্ষতা দিয়ে পৌঁছিয়ে হৃদয়কে স্পর্শ করেন, তখন হয় কবিতার সফল আবৃত্তি। কবি কবিতায় যা বলতে চেয়েছেন আবৃত্তিশিল্পী তাই তার কণ্ঠমাধুর্য দিয়ে উপস্থাপন করতে পারলে শ্রোতা কবিতা শোনার আনন্দ অনেক বেশি পান ও কবিতার কথা উপলব্ধি করতে পারেন। কবির কবিতাকে আবৃত্তিকার তার নন্দনদক্ষতা দিয়ে কখনো কখনো নতুন মাত্রাও দান করেন। শ্রোতা তখন সুধার মতো কবিতা উপভোগ করেন। জীবনানন্দ দাশ এঁর 'সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি', এই কেউ কেউদের সব কবিতাই আবৃত্তিযোগ্য। এর মধ্যেও অধিকতর ভালো লাগা এবং আবৃত্তিকার আবৃত্তি করতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এমন কবিতাগুলো একসাথে গ্রন্থিত থাকলে, যারা আবৃত্তি করেন তাদের জন্য সুবিধা হয়, যারা আবৃত্তি চর্চায় উৎসাহী তাদের জন্যও। এমনকী পাঠের জন্য কবিতাপ্রেমিরাও এই সংকলন সংগ্রহে রাখতে আগ্রহী হবেন নিশ্চয়ই।