এই গল্পের মূল চরিত্রে সবাই কিশোর-কিশোরী। কৈশোর যেন বারূদের মতোই উন্মুখ। কখনো একে শান্ত-নিষ্প্রভ মনে হলেও কখনো কখনো সে মূর্তিমান জাজ্বল্যময়। কখনো অন্য কেউ একে জ্বালিয়ে দেয়, কখনো আবার পারিপার্শ্বিকতার উপর ভর করে সে নিজেই প্রজ্বলিত হয়। আবার এই কৈশোর সমুদ্রের মতোই বহুরূপী। কখনো শান্ত নির্ভারÑকখনো উন্মত্ততায় উচ্ছ¡সিত। আবেগের তোড়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সব কিছু। অপরিণত আবেগীয় তাড়নায় কখনো কখনো জীবনে ঘটে যায় মর্মন্তুদ দুর্ঘটনা কিংবা অপূরণীয় কোন ক্ষতিÑযা সামলানোর সামর্থ্য অনেক ক্ষেত্রেই ওরা রাখে না। প্রেক্ষাপট ২০০৪। রাইম একজন কলেজপড়–য়া কিশোর। এই লিখাটাকে বলা চলে ওর ডায়েরির অংশবিশেষ। আনাড়ি জীবনবোধ থেকে লেখা এই গল্পের পুরোটা জুড়ে আছে কিশোরকালীন নানারকম সহজাত আবেগ অনুভূতির প্রতিফলনÑটিনেজারদের নানাবিধ মনোদৈহিক চাহিদার সরলসোজা বহিঃপ্রকাশ। কিশোর বয়সের চাহিদা, জটিলতা ও বাস্তবতার এইসব বিশ্লেষণ একান্তই কিশোর রাইমের বিবেচনাপ্রসূতÑতার সমসাময়িক কালের, একটা নির্দিষ্ট সমাজব্যবস্থার। সংস্কৃতি ও সভ্যতার হালের উপাদানগুলি বিবেচনায় না নিয়ে শুধুমাত্র উপস্থাপিত বিষয়বস্তুকে উপলব্ধি করলে অবলীলায় তা স্থান-কালের ছাপিয়ে হয়ে যায় চিরন্তন কৈশোরের ভুলভ্রান্তি, জীবনবোধ, আনন্দ-বেদনার মিথষ্ক্রিয়ায় উপভোগ্য এক কিশোর উপাখ্যান। শত চেষ্টায়ও অতিবাহিত হয়ে যাওয়া সময়ের চুল পরিমাণ পরিবর্তনসাধ্য নয়। তাই, আত্মসচেতনতার রক্ষাকবচে বেড়ে উঠুক প্রতিটি কৈশোর।