"লেবুমামার সপ্তকান্ড (অগ্রনী ব্যাংক পুরস্কার) -২০০৮"বইটির প্রথমের কিছু অংশ: বাজিমাৎ বড়ােমামার বিয়ের আর দু’দিন বাকি। বাড়িঘর সব ভরে উঠেছে আত্মীয়-স্বজনে। আমাদের মতাে অনেকেই এসে গেছে, কেউ আসছে, কেউ খবর পাঠিয়েছে বিয়ের আগের দিন এসে পৌছবে বলে। মেজোমামা তখন কলকাতার কোন্ এক কলেজে বি. এ পড়েন। দিন কয়েকের ছুটি নিয়ে তিনিও এসে গেছেন এ উপলক্ষ্যে। তারই মুখে প্রথম শুনলাম লেবুর কথা। তিনি একদিন আমাদের বললেন, 'লেবু আসবে বিয়েতে। আমি প্রথমে ভাবলাম, বুঝি বা কমলা লেবুর কথা বললেন তিনি। আমাদের মতাে ছেলেমেয়ে যারা বিয়েতে এসেছে তাদের সবাইকে কমলা লেবু খাওয়ানাে হবে। কিন্তু শীতকাল ছাড়া কমলা লেবু পাবে কোথায়? তাহলে নিশ্চই বাতাবী লেবু? কিন্তু বাতাবী লেবু হলে আমার তাতে লােভ নেই একরত্তিও। ছ্যাঃ! মামাবাড়ি বিয়েতে এসে কেউ বুঝি বাতাবী লেবু খায়! আমাদের বাড়িতেই রয়েছে কতাে পাকা বাতাবী লেবু। তবে হ্যা, এ অ-দিনে কমলা লেবু এনে খাওয়াতে পারলে আমি দু'একটা, দরকার হলে বেশিও খেতে পারি। শুনেছি কলকাতা এক আজব জায়গা। হয়তাে সেখানে থেকে কমলা লেবুই আসবে। বিয়ের দিন যতাে ঘনিয়ে আসতে লাগলাে, মেজোমামা লেবু লেবু করে ততােই যেনাে অস্থির হয়ে উঠলেন। বেহ ছােটোমামা বয়সে ছিলাে আমার একদিনের ছােটো। কাজেই আমরা ছিলাম প্রায় সমবয়সী। ছােটোমামা তাই আমাকে বাচ্ছুমামা বলে ডাকতেন, আমি তাকে। ডাকতাম, কুট্টিমামা। অবশেষে তাকেই গিয়ে ধরলাম। কাচুমাচু করে জিজ্ঞেস করলাম,—আচ্ছা কুট্টিমামা, একটা কথা... এ অবধি বলতেই মামা হঠাৎ আমাকে সাবধান করে বলে উঠলেন,
Md. Nasir Ali বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলীর জন্ম ১০ জানুয়ারি ১৯১০ সালে বিক্রমপুরে । পড়াশোনা করেছেন তেলিরবাগ কালীমোহন দূর্গামোহন ইনস্টিটিউশনে । এন্ট্রাস পাস করেছেন ১৯২৬ সালে স্বর্ণপদক সহ । পরবর্তীতে পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে । চাকরি জীবনের শুরুত্ব অবিভক্ত ভারতের কোলকাতা হাইকোর্টে । ’৪৭ পরবর্তী সময়ে একই সাথে প্রকাশনা ও ঢাকা হাইকোর্টে চাকরি করেছেন । প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান নওরোজ কিতাবিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা অংশীদার । শিশু সাহিত্যের উপর প্রবর্তিত প্রায় সবগুলো পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন । এরমধ্যে ইউনেস্কো, বাংলা একাডেমী, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, ইউনাইটেড ব্যাংক, লাইব্রেরী অব কংগ্রেস, যুক্তরাষ্ট্র, ইসলামিক ফাউন্ডেশন উল্লেখযোগ্য । অধুনালুপ্ত দৈনিক আজাদ পত্রিকার ‘মুকুলের মহফিলী” শিশু বিভাগের প্রধান হিসেবে “বাক্যবান” নামে সমধিক পরিচিত । ফটোগ্রাফি, সেলাইকর্ম, রবীন্দ্র-নজরুল সংগীতের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন । তিনি ১৯৭৫ সালের ৩০ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন ।