সূচীপত্র * মুখবন্ধ * চিত্র সমগ্র * গোধূলির আলোয় সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত * মেধাবী বালক অশোক ও বৃদ্ধ চাণক্য * উজ্জয়িনীর পথে অশোক ও শ্রেষ্ঠী কন্যা মহাদেবী * ভারতবর্ষের সিংহাসনে অশোক * কলিঙ্গের কালযুদ্ধ * সন্ন্যাসী সম্রাট অশোক * কুণাল কথা * অশোকের শিলালিপি * অশোকের স্তম্ভলিপি * অশোকের মহানির্বাণ * প্রথম : মুখ্য শিলানুশাসন * প্রথম : স্বম্ভানুশাসন
মুখবন্ধ যিশু খ্রিস্টের জন্মের তিনশো বছরেরও আগে পাটলিপুত্রের রাজপ্রাসাদ থেকে ভারতসম্রাট তাঁর পশ্চিমের রাজ্যসীমার দিকে তাকালে দেখতে পেতেন কাবুল, কান্দাহার, হিাট থেকে উটের সারি চলেছে পশ্চিম-উত্তরে। খাইবারপাসের কাছে পাহাড়ি গাঁয়ে পারসিক, গ্রীক, আসিরিয়দের সঙ্গে নাচে গানে মেতে উঠছে বাংলার রূপসী তরুণী। দক্ষিণে কৃষ্ণা নদীর জলে সাদা পাল তুলে বাংলার তমলুকের (তাম্রলিপ্ত) মাঝি গান গাইছে। সুদূর ইজিপ্ট, ব্যাবিলন, গ্রিস, পারস্যের জ্ঞানীগুণী, শিল্পী, সাহিত্যিক , বিজ্ঞানী , চিকিৎসক সবার একটি আকাঙ্ক্ষা একবার ভারতবর্ষের মাটিতে পা দিতে হবে।
তারপর গঙ্গা দিয়ে কত জল বয়ে গেছে। সেদিনের পাটলিপুত্র আজ পাটনা। দূর সমুদ্রে পাড়ি-দেওয়া ভাঙা পরিত্যক্ত নৌকো যেমন শুকনো বালিতে মুখ গুঁজে অতীত স্মৃতির মধ্যে সমুদ্রের গন্ধ খোঁজে, ভারতবর্ষ আজ তেমনি একটি পরিত্যক্ত, অবহেলিত নৌকো। আমেরিকা-ইউরোপের ভোগবাদী পণ্যসভ্যতা তাকে আজ অনুকম্পনা চোখে দেখে। আজকের নিঃস্ব , রিক্ত, দরিদ্র ভারতবর্ষের অতীত ঐহিত্যের কিছুই কি তার নেই? আছে। শুধু আছে না, সে সম্পদ কেবল ভারতবর্ষেই আছে দিন আসছে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে বিপন্ন বিশ্বের উজ্জ্বল উদ্ধারের চাবিকাঠির খোঁজে যখন সবাইকে অতীত-ভারতমুখী হতে হবে।
খুঁজতে খুঁজতে বহু দূর। ধুলো সরিয়ে, অপরিচিত অক্ষর, অজানা শব্দের গোলকধাঁধা থেকে রত্নভাণ্ডারের খোঁজ, আরো খোঁজ। অসংখ্য তারা মধ্য থেকে ধ্রুবতারাটিকে চিনে নিতে হয়, তবে সন্ধানী ঠিক লক্ষ্যে স্বর্ণখনিতে পৌঁছে যেতে পারে। পৃথিবীর ইতিহাসে, পাহাড়ের গুহায়, পাহাড়ের চূড়ায়।
সেদিন ভারত ছিল সবার চোখের মণি, তাই আছে অসংখ্য লিখিত ইতিহাস, ঐতিহাসিক বিবরণ, কাহিনী, উপকথা, উপাখ্যান, কিংবদন্তী, আর আছে আধুনিক বিজ্ঞানের গবেষণাগার থেকে প্রকাশিত সাম্প্রতিক ঐতিহাসিক তথ্য। কত ঐতিহাসিক গবেষকের সারা জীবনের পরিশ্রমের ফসল তাঁরা আমাদের হাতে তুলে দিয়ে গেছেন।