১৯১৭ সালে প’কাশিত হয় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৬ -১৯৩৭) রচিত শ্রীকান্ত (প্রম পর্ব) উপন্যাসটি। ওটি প’কাশের সাথে সাথেই এর কাহিনীর অভিনবত্ব যেমন পাঠকচিত্তকে অভিভূত করে দেয়, তেমনি এর প্রধান চরিত্র দুটিও সর্বচিত্ত বিমুগ্ধ করে তোলে। এই আখ্যানে আমরা এমন দুই কিশোরের আবির্ভাব ঘটতে দেখি; যারা দুরন্ত, অদম্য, বেপরোয়া; আর যাদের ওই ক্ষুদ্র কিশোর-অন্তর অশেষ মানবিক করুণা ও মমতায় পরিপূর্ণ। তারা নিজেদের দুদর্ম্য ও সুবিপুল ও অগাধ দুরন্তপনা দিয়ে শুধু পাঠককেই বিস্ময়াভিভ‚ত করে তোলে না, সাহিত্য-সমালোচকগণকেও প’বলরকমে মোহিত করে নেয়। নিজেদের ওই বেপরোয়া, দুর্দান্ত কর্মাবলীর অপার দেদ্বরাত্ম্যগুণে তারা যেমন চিত্তমুগ্ধকর ও বিস্ময়-জাগানিয়া হয়ে ওঠে; তেমনি তারা আমাদের সাহিত্য-দুনিয়ায়ও লাভ করে গহীন অমরত্ব। এই যে এই উপাখ্যানে, এমন অভিনব কিশোর-নায়ক গড়েছেন শরৎচন্দ্র; সেই নায়কেরা কতোটা তাঁর কল্পনাপ’তিভাগুণে সৃজিত? নাকি তিনি প’ভাবিত হয়েছিলেন বিশেষ কোনো প’তিভার দ্বারা? সেই প’ভাবের আলোড়নজাত সৃষ্টিই কী এই শ’ীকান্ত ও ইন্দ্রনাথ চরিত্র দুটি? এই নিবন্ধে ওই বিষয়ের ওপর আলোকপাতের চেষ্টা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এখানে উদঘাটন করার চেষ্টা করা হয়েছে যে, এই সুশীল মন্থরতা ও শ্লতাগ’স্ত সমাজেÑ এই যে দুরন্তদ্বয়ের আবির্ভাব ঘটেছে, তাদের এই আগমন কতোটা আকস্মিক ছিলো! তারা কী হঠাৎই দেখা দেওয়া দুই বিদ্যুৎ-ঝিলিক? পরম্পরাহীন? নাকি তাদের আগেও বাংলা সাহিত্য পেয়ে এসেছে অমন পরোয়াশূন্য সুতীব্র কিশোরদের, যারা হঠাৎ এসে হঠাৎই নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে! এই ক্রমপরম্পরার বিষয়টিও, এই বইয়ে, বিশদভাবে উদঘাটনের চেষ্টা করা হয়েছে।
Title
শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত ও ইন্দ্রনাথ কতোটা মৌলিক সৃজন তারা, কতোটা প্রভাবজাত
ইনডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এ অধ্যাপনারত আকিমুন রহমান পিএইচ ডি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ; আধুনিক বাংলা উপন্যাসে বাস্তবতার স্বরূপ, সােনার খড়কুটো, পাশে শুধু ছায়া ছিলাে, পুরুষের পৃথিবীতে এক মেয়ে, রক্তপুঁজে গেঁথে যাওয়া এ মাছি, এইসব নিভৃত কুহক।