সকাল সাতটায় ট্রেন এসে থামল এদিককার শেষ স্টেশন বাগেরহাটে। ট্রেন থেকে নামার আগে তিনি জানালাপথে বাইরে তাকালেন একবার। স্টেশনটা অবিকল একই রকম আছে আছে বিশাল সেই মহুয়া গাছটাও। ভরা বসন্তে গাছটি এখন ফুলে ফুলে ভরা। বাতাসে দুলে দুলে ফুলেরা যেন গাইছে বসন্ত—সংগীত। ফুলে ফুলে ঝুলে ঝুলে মহুয়া—মধু পান করছে মৌটুসি পাখিরা। অদ্ভুত ভালো লাগায় আবিষ্ট হলেন তিনি। নাক উঁচু করে বুক ভরে নিঃশ্বাস টানলেন জোরে। না, মহুয়া ফুলের মিষ্টি গন্ধটা এলো না নাকে। চোখের চশমাটা ঠিকঠাক করে উঠে দাঁড়ালেন এবার, ভিড়—ভাট্টা ঠেলে নেমে পড়লেন প্ল্যাটফর্মে। আকাশের দিকে মুখ করে আবারও বাতাস ভরলেন বুকে ছেড়েও দিলেন শব্দ করে, যেনবা ফেললেন দীর্ঘশ্বাস। বুকের গভীর গহনে যেন বেজে উঠল বেহালার সুর ছলছল করে জল জমে গেল চোখের ভেতরে। এগোতে চাইলেন তিনি মহুয়া গাছটার দিকে। কিন্তু প্ল্যাটফরম জুড়ে মানুষের হুড়োহুড়ি কলরব। তাই তিনি একটু দাঁড়ালেন। যারা নামার তারা নামছে ট্রেন থেকে। উঠবে যারা তারা উঠতে চাইছে মহাব্যস্ত হয়ে। না হলে মিলবে না সিট, দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। সময়ও মাত্র দশ মিনিট। ইঞ্জিন ঘুরে এসে লাগবে আবার। ছেড়ে যাবে খুলনামুখো
শরীফ খান। জন্ম : ৭ এপ্রিল, ১৯৫৩, গ্রাম : সাতশৈয়া, উপজেলা, ফকিরহাট, জেলা : বাগেরহাট। পিতা : খসরু আলী খান । মা : হাশেনা খাতুন। লেখালেখির শুরু ছাত্রজীবন থেকেই। গল্প-উপন্যাস-স্মৃতিকথা-প্রবন্ধ-ফিচার-ভ্রমণকাহিনী সবকিছুই লিখছেন । শিশু সাহিত্যের সাতরঙা জগতেও তার স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণ। বাংলাদেশের কীর্তিমান পক্ষী ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ও পাখি ও বন্যাপ্রাণী আচরণবিদ শরীফ খানের দীর্ঘ গবেষণার ফল ‘হালতি পাখির বাসা’ ও ‘বড় হালতির ছানা শীর্ষক দুটি প্রামাণ্য ভিডিও চলচ্চিত্র; এই দুটি পাখির বাসা-ডিম-ছানাসহ সব তথ্য-উপাত্ত এদেশে একমাত্র তারই কজায়।। তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমী প্রকাশিত ৮ খণ্ডের শিশু বিশ্বকোষের অন্যতম প্রদায়ক। এশিয়াটিক সােসাইটি অব বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত ১০ খণ্ডের বাংলাপিডিয়ারও তিনি অন্যতম প্রদায়ক । পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আই,ইউ,সি,এন কর্তৃক প্রকাশিত পাখি ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক Red data book প্রস্তুতেও তিনি অনবদ্য ভূমিকা পালন করেন। পুরস্কার : জাতীয় পর্যায়ে অগ্রণী ব্যাংক শিশু-সাহিত্য পুরস্কার, কবি কাদের নেওয়াজ স্মৃতি স্বর্ণপদক, কণ্ঠস্বর স্বর্ণপদক, বাগেরহাট।