বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া বিজ্ঞান একটি সামাজিক অর্জন; শুধু মুষ্টিমেয় নির্বাচিত বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীর উদ্ভাবন ও আবিষ্কারের ফসল নয়। এই উপলব্ধি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ভেতর দিয়ে অধিকতর সত্য হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কাছে মানুষের প্রত্যাশা বৃদ্ধি পেয়েছে যেমন, বিজ্ঞান চর্চা ও প্রযুক্তির বিকাশও তেমনি ক্রমাগত বেশি হারে সামাজিক সমর্থনের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির আড়ালে ব্যক্তি বিজ্ঞানীর অনুসন্ধিৎসা, প্রেরণা উদ্ভাবনীক্ষমতা ও সৃজনশীলতা অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ব্যক্তি প্রতিভার স্ফূরণ ঘটছে কি ঘটছে না তা নির্ধারণ করে সমাজ, এক জটিল প্রক্রিয়ায়। সমাজ ব্যক্তিমানুষের সমষ্টিমাত্র নয়। একটি যৌথ ব্যবস্থা সব মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক ও প্রভাবে। অন্যদিকে বিজ্ঞানচর্চা, বিশেষ করে আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণা এমন একটি জটিল যৌথ ও বিনিয়োগ নির্ভর কাজ, যেখানে সমাজের প্রভাবমুক্ত হয়ে এর অগ্রগতি সাধন সম্ভব নয়। সমাজ ও বিজ্ঞান উভয়েই যেখানে ক্রমাগত জটিলতা ও জঙ্গমতা লাভ করেছে, সেখানে এদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া, প্রভাব ও পরিব্যক্তি আরও জটিল ও ব্যাপক হয়ে উঠছে। বস্তুত সমাজের সঙ্গে বিজ্ঞানের পারস্পরিক নির্ভরতা ও সম্পর্ক যত গভীর হয়েছে ততই অগ্রগতি ঘটেছে সমাজ ও বিজ্ঞানের। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজ ও বিজ্ঞানের আন্তঃসম্পর্কের ভূমিকা নিয়ে র লেখা এ বই শিক্ষার্থীসহ অনেক পাঠকের জন্যই গুরুত্ববহ।