কোন ব্যক্তি যখন অন্য কোন ব্যক্তিকে যাচাই-বাছাই করে, তখন তার উদ্দেশ্য কি হয়? শুনো, যদি কারো ইলমের উপর সমালোচনা করা হয়, তবে তার মতলব এটাই হয় যে, ঐ মাসআলায় ঐ ব্যক্তির ইলম সঠিক নয়; বরং সমালোচকের ইলম সঠিক বা সমালোচক ঐ মাসআলাকে তার থেকে ভালো জানেন। এমনিভাবে যদি কারো উপলব্ধির উপর, বোধশক্তির উপর, সমঝের উপর সমালোচনা করা হয়, সেক্ষেত্রে স্বীয় সমঝের বড়াই তখন সমালোচকের উদ্দেশ্য থাকে। আর যদি কারো আমলের উপর সমালোচনা করা হয়, তখন স্বীয় আমলের উপর বড়াই করার উদ্দেশ্য দিলে থাকে। মোটকথা যে বিষয়ে অন্যের সমালোচনা করা হয়, সে বিষয়ে স্বীয় ইলম, আমল, আকল ও সমঝের মোকাবিলায় অন্যের ইলম, আমল, আকল ও সমঝকে হেয় মনে করা হয়। কখনো কখনো সমালোচক এ বিষয়ে সমালোচিত ব্যক্তি থেকে সত্যিই উত্তম হয়ে থাকে। আবার কখনো কখনো বাস্তবিক অর্থে উত্তম হয় না; তথাপি সে তার আত্মতুষ্টির উন্মত্ততায় নিজেকে উচ্চতর মনে করে থাকে। ইসলামী পরিভাষায় একেই 'অহংকার' বা 'অহমিকা' বলা হয় এবং ইবলীসই সর্বপ্রথম এই অহংকারের শিকার হয়। এই ভ্রান্ত শ্রেষ্ঠত্ববোধই তাকে 'ফেরেশতাদের উস্তাদ'-এর পরিবর্তে কিয়ামত পর্যন্ত মালাউন বানিয়ে দেয়। মনে হয়, এই ভ্রান্ত শ্রেষ্ঠত্ববোধই জামাতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী সাহেবকে নবী-রাসুল, সাহাবা এবং সালফে সালিহীনের সমালোচনা করতে সুড়সুড়ি দিয়েছে। বিজ্ঞ লেখক কিতাবটিতে নবী-সাহাবী-ওলীদের ব্যাপারে মওদূদী সাহেবের ঔদ্ধত্যপূর্ণ সমালোচনার স্বরূপ তোলে ধরেছেন। আশা করি, চিন্তাশীলদের জন্য কিতাবটি উপকারী হবে।
মুহাম্মদ ইউসুফ লুধিয়ানভি (১৯৩২ – ২০০০) ছিলেন একজন পাকিস্তানি সুন্নি মুসলিম পণ্ডিত, লেখক, মুহাদ্দিস, মজলিস-ই-আহরার-ই-ইসলামের নেতা, এবং আলমি মজলিস তাহাফ্ফুজ খতমে নবুওয়াতের সহসভাপতি। তিনি ভারতের পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশের লুধিয়ানায় জন্মগ্রহণ করেন।