পরি, বাঘ ও ডাইনি শিশু থেকে বড় সকলকে আকর্ষণ করে। পরি ও ডাইনি যেমন ভীষণভাবে কমে গেছে তেমনি বাঘও হারিয়ে যাচ্ছে। অহঙ্কারী হাতি ও ঈগলও হারিয়ে যাবার পথে। কিন্তু গল্পে থেকে যাবে। ভূত থেকে গেছে, আমরা এখনো টেলিভিশনে, সিনেমার পর্দায় খুব আগ্রহ নিয়ে ভূত দেখি। ঠাকুরমার ঝুলি পড়ি। আবার গ্রামে-গঞ্জে ও শহরে এখনো ভূতের উৎপাতের খবর শোনা যায়। এই বইয়ের ১০টি গল্পের পরতে পরতে আছে টান টান আকর্ষণ, উত্তেজনা ও রহস্য। যেমন কাহিনী তেমন ভাষা। ‘জ্যোৎস্নাপরি ও ঢেউকুমার’ কী কা-ই না দেখাল! ‘ফুল ফোটানোর গানে’ রাজপুত্রের সে কী সাহস ও বুদ্ধি। আবার ‘ব্যাঘ্রশাবক শিকার’ গল্পে শিকারির বউয়ের কী মায়া বাঘের ছানা-দুটির জন্য। তাদের কী হল তাও আছে গল্পে। এসব গল্প-কাহিনী এই সময়ের কিন্তু চিরকালীনও। বাংলা ভাষা ও গল্পের ভুবনে জ্বলজ্বল করা তারার আলোর মতো দ্যুতিময়। মায়াবী ও টান টান আকর্ষণীয়, বার বার পড়ার মতো। অন্যকে শোনানো যায় পড়ে পড়ে। শিশু-কিশোরদের মতো মা-বাবাদেরও পড়ার উপযোগী। আসলে ছোটদের বই অভিভাবকদেরও পড়া জরুরিÑ গল্পগুলোতে লেখক তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। গল্পগুলো শুধু কাহিনীর মজায় ঠাসা নয়, আনন্দ-বেদনা ও অজানাকে জানার রসেও ভরপুর।
Bipradash Barua- জন্ম ২ আশ্বিন ১৮৬২ শকাব্দ (২০ সেপ্টেম্বর ১৯৪০) চট্টগ্রামের ইছামতী গ্রামে। পড়াশুনা চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। গল্প, উপন্যাস, প্রকৃতি ও বিচিত্র বিষয়ে লেখেন। পাখি, সমুদ্র ও বৃক্ষ, বনমর্মরভূমি, ভ্রমণ, গবেষণা-বিশাল লেখার ভুবন। বাংলাদেশের আনাচ-কানাচ উঠে আসে দৈনিক পত্রিকার কলামে। রাতের রেলগাড়িতে ছায়াপথে ভ্রমণ এই বিষয়ে প্রথম পদক্ষেপ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিশাল রাজ্যে প্রবেশের ছোট্ট জানালা। সেই থেকে শুরু। তার ফসল দৈনিক পত্রিকার সহজ-সরল লেখাগুলো। প্রকৃতির বিচিত্র বিষয় নিয়ে এক ডজনের বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে। গাছপালা, তরুলতা ও বৃক্ষ ও নিসর্গ, নিসর্গের খোঁজে, প্রকৃতিও প্রতিশোধপরায়ণ, বিপন্ন বাংলাদেশ ও বন্ধু বৃক্ষ প্রভৃতি গ্রন্থে তাঁর মনোভঙ্গি ধরা পড়ে। এসব লেখায় ছড়িয়ে আছে আকাশ ও নক্ষত্রপ্রীতি। ১৯৯১-তে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৪১১ সনে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার লাভ। তাঁর তিনটি বই অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার লাভ করে। পেয়েছেন রেডি টুডে প্রবর্তিত প্রথম গ্রিন এওয়ার্ড ২০১০।