সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় উপন্যাস লিখছেন ১৯৯৮ সাল থেকে। আজ পর্যন্ত বহু উপন্যাস লিখেছেন। তাঁর এই নিরন্তর প্রয়াসের পিছনে আছে পাঠকদের দুর্বার আগ্রহ। যথার্থ ঔপনাসিকের মুনশিয়ানায় তিনি কাহিনির মধ্যে সৃষ্টি করেন অদ্ভুত এক মোহঘোর। তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলো ভীষণ চেনা লাগে, একেবারে জীবন্ত! যেন ছোঁয়া যাবে। কথা বলা যাবে। খুব সহজেই তিনি উপন্যাসকে সমান্তরাল বাস্তবতায় পরিণত করতে পারেন। সমাজের নানান প্রেক্ষাপটে চিত্রিত হয়েছে তাঁর কাহিনি। বিভিন্ন জীবিকা ও বিচিত্র মনের মানুষ এনজয় করেছে তাঁর আখ্যান। সহজ-স্বাদু গদ্যে তিনি পরিবেশন করেছেন জটিল মনস্তত্ত্ব! প্রেম যখন বিষয় হয়ে আসে তাঁর লেখনীতে আশ্চর্য এক কাব্যময় উদ্ভাস দেখা দেয়। প্রতিটি উপন্যাসেই নিসর্গের একটা বিশাল ভূমিকা থাকে। প্রকৃতি হয়ে ওঠে তাঁর উপন্যাসের আবহ। সময় বদলায়, সমাজে আসে পরিবর্তন। বদলায় মানুষের মূল্যবোধ। লেখকও বদলে ফেলেন নিজেকে। হয়ে ওঠেন এই প্রজন্মেরই এক ভাষ্যকার। সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের নানা স্বাদের দশটি উপন্যাস চয়ন করে প্রকাশিত হল এই অসামান্য সংকলন। এতে আছে এইসব স্মরণীয় উপন্যাস— মায়াভূমি, গ্লানি, হলুদবনি, আদিম জনপদ, অবুঝ মেয়ে, প্রাণের মানুষ, দেখে পার হবেন রাস্তা, মেঘেদের ঘরবাড়ি, বাহিরপানে এবং জ্যোৎস্নাপুজো।
সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম ২১ জানুয়ারি ১৯৬১, হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায়। অদ্যাবধি উত্তরপাড়ার পৈতৃক বাড়িতে বসবাস। পিতা সাহিত্যসেবী। লেখা শুরু আঠারো-উনিশ বছর বয়সে। সে সময় দু-তিনটি গল্প স্থানীয় লিটল ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছিল। তারপর দীর্ঘ বিরতি। বারো বছর পর (১৯৯৪) আবার একটি গল্প লিখে সরাসরি দেশ পত্রিকায় পাঠিয়ে দেন। একসারি নবীন গল্পকারদের সঙ্গে গল্পটি ছাপা হয়। পরিচয় হয় বিরাট পাঠককুলের সঙ্গে। বিগত চার বছর ধরে নামী-অনামী বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লিখে যাচ্ছেন। প্রথাগত শিক্ষা স্নাতক পর্যন্ত। এ ছাড়া ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা। অল্পবয়স থেকে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত থেকেছেন। এখন একটি ফটোপ্রিন্টিং সংস্থায় কর্মরত। প্রথম উপন্যাস ‘প্রত্নকন্যা'। মল্লারপুর’ ১৯৯৯ সালের স্নোসেম-আনন্দ দুর্গোৎসব অর্ঘ্য-এ শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসেবে পুরস্কৃত হয়। এ ছাড়াও ১৯৯৭ সালে পেয়েছেন গল্পমেলা পুরস্কার।