ইংরেজি সাহিত্যের ঐতিহ্যবাহী ইতিহাসে টেড হিউজ অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি, লেখক ও অনুবাদক হিসেবে স্থান পেয়েছেন। কবি হিসেবে তাঁর কয়েক রকমের পরিচিতি রয়েছে। তিনি ছিলেন একাধারে প্রকৃতির কবি, পরিবেশবাদী কবি, জীবজন্তু এবং পশুপাখি প্রেমিক কবি এবং শিশুদের কবি। রাজকবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের পর তাঁকেই প্রকৃতির কবি বলা হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে দু’জনের দর্শন আলাদা। ওয়ার্ডওয়ার্থের লক্ষ্য ছিল প্রকৃতির মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করা। শত বছর পরে রাজকবি টেড হিউজ ধরিত্রীকে দূষণের হাত থেকে রক্ষার জন্য পরিবেশ আন্দোলন করেছেন। তিনি ১৯৬০ এর দশক থেকে পানির দূষণ, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত বিপর্যয় এবং বিপন্ন জীববৈচিত্র্যকে রক্ষার লক্ষ্যে আমৃত্যু কাজ করেছেন। বিশ্ব সাহিত্যের ইতিহাসে তিনিই সর্বপ্রথম পরিবেশ বিষয়য়ক শিশুতোষ উপন্যাস দি আয়রন ম্যান (১৯৬৮) লিখেছেন। যার ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩ সালে লিখেন দি আয়রন উমান বা লৌহরমণী। প্রতিনিয়ত কলকারখানা থেকে নির্গত রাসায়নিক তরল বর্জ্য নদীর পানিতে দূষণ ঘটাচ্ছে। কারখানার চিমনি থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া বায়ু দূষিত করছে। কারখানায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নামে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। জল ও স্থলের প্রাণী নানা রকমের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তারা ভয়ংকর যন্ত্রণা ভোগ করে মারা যাচ্ছে। ভিন গ্রহ থেকে আসা এ্যাভেনজারের মতো একজন লৌহরমণী পরিবেশ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে এগিয়ে আসে। ছোট্ট বালিকা লুসিকে সঙ্গে নিয়ে সে তার অভিযান শুরু করতে চায়। লুসি অভিযানের ভয়াবহতার কথা ভেবে দি আয়রন ম্যান উপন্যাসে বর্ণিত লৌহপুরুষের বন্ধু ছোট্ট বালক হোগার্থের সাহায্য চায়। হোগার্থ এই কাজে লৌহপুরুষের সাহায্য চায়। এভাবেই শুরু হয় লৌহরমণী উপন্যাসের লোমহর্ষক কাহিনী। এই বইটি শিশুকিশোর এবং তাদের অভিভাবক পাঠকদেরকে পরিবেশ সচেতন করে তুলবে।