রবিন হুড নামে বাস্তবে কেউ কোনোকালে ছিল কি? নাকি পুরোটাই উপকথা? এ প্রশেড়বর সমাধান নেই। কারণ বর্ণিত রবিন হুডের সময়কাল একাদশ ও দ্বাদশ শতক। ওই সময়ের কোনো লিখিত দলিল পাওয়া খুব সহজ নয়। তবে মানুষের মুখে মুখে তার দস্যুতা এবং দরিদ্রবান্ধব ও রোমহর্ষক সাহসিকতার যে গল্পগুলো মুখে মুখে চলে আসছিল সেগুলোকে মধ্যযুগে ছন্দাকারে লিখিত রূপ দেওয়া হয়। সেগুলিকে আঠারো শতকের শেষদিকে জোসেফ রিটসন সংগ্রহ ও পুনর্মুদ্রণ করে সাহিত্যের পাতায় ঠাঁই করে দেন। লে․কিক উপকথা অনুযায়ী ১১৬০ সালের শেষদিকে বা ১১৬১ সালের শুরুর দিকে স্যাক্সন মা জোয়ানার গর্ভে এবং আধানর্মান ও আধাস্যাক্সন বাবা উইলিয়াম ফিযুথের ঔরসে রবিন হুডের জন্ম। তার জীবন যেমন ছিল বর্ণাঢ্য, তেমনি সংক্ষিপ্ত। অনেক কারণে রাজা রিচার্ডের প্রিয়পাত্র ছিল রবিন। তাই ‘দস্যু’ হওয়া সত্তে¡ও তার প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী শতকের শুরুর দিকে রবিনের সেই সাধারণ ক্ষমা বাতিল করে যুবরাজ জন সিংহাসনে আরোহন করেই তাকে বন্দি করেন। তাঁর নির্দেশে নটিংহ্যাম দুর্গের এক কারা প্রকোষ্ঠে রবিনকে জীবিত কবর দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু কিন্তু বিশ্বসেরা রবিন হুডকে বন্দি করে রাখার সাধ্য ইংলেন্ডের রাজার ছিল না। রবিন হুড এক জ্বলন্ত প্রতিবাদ ও অদম্য সংগ্রামের নাম। রবিন হুড এমনই এক সংগ্রামী চরিত্র, যার কীর্তি নিয়ে মানুষের কল্পনার ফানুস ওড়ানো কোনোদিন শেষ হবে না।