বচন, মানে মানুষের মুখের কথা বা বাক্য। কথার কতোই না স্বরূপ। বাক্যবাণ, কথার ছুরি কিংবা বাঁকা কথার তড়িত আমাদের ক্ষত-বিক্ষত করে বৈকি। কখনো কখনো সুবচনও আমাদের কানে তপ্ত লাভার মতো যন্ত্রণাসমেত ঢুকে পড়ে। সত্য অপ্রিয় বলেই মিথ্যার সঙ্গে সমঝোতা সিংহভাগ মানুষের। তাই সময়-সুযোগ বুঝে অর্ধসত্য, সিকিসত্যকে পরম বলে তারা স্বকার্যে লাগায়। সাধারণের কথা ও বাক্য মাত্রই বচন বা প্রবচন নয়, মিথ্যাকে নাকানিচুবানি দিতে পারা তীক্ষ্ণ বোধসম্পন্ন শ্লেষাত্মক বাক্যই বাংলা ভাষায় বচন বা প্রবচন। প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়ের ভাষায় ছাঁটাকাটা কথামাত্রই প্রবচন। প্রবচন মানেই নির্বাসনে দেওয়া সত্যবচনের পুনর্বাসন- আমার এমনটাই উপলব্ধি। সাম্প্রতিককালে সত্যবচন থেকে শতহাত দূরে জ্ঞানবৃদ্ধ অধ্যাপক, ক্ষমতালিপ্পু আমলা ও রাজনীতিক, ধূর্ত লেখক ও উচ্ছিষ্টভোগী বুদ্ধিজীবী। আমার 'অপ্রিয় বচন' ও 'বাণীপুত্র' শিরোনামের দুটো প্রবচন গ্রন্থে এমনটাই পর্যবেক্ষণ। আমি জানি এইসব প্রবচন পড়ে কিছু পরজীবীর গা জ্বালা করবে, স্বার্থান্ধ-ধর্মান্ধ-মতান্ধরা মারমুখো হবে, কিছু পাতিশিয়াল গলা উঁচিয়ে আবারও গর্তে লুকোবে। তাই উল্লিখিত প্রবচনগ্রন্থ দুটোর 'প্রবচনসংগ্রহ' শিরোনামে অমর একুশে বইমেলা ২০২৩-এ আত্মপ্রকাশ।