ফ্ল্যাপে লিখা কথা `মুক্তিযুদ্ধ’ একটি উজ্জল ইতিহাস।এর ভিতরে যেমন ছিল রক্তাক্ততার আর্তি ও তীব্রতা। তেমনি ছিল স্বপ্ন ও সম্ভাবনার অবারিত আকাশ। এটি বাঙালী জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ দর্শন। তার অগ্রগতির দিক নির্দেশাধর্মী মাইলফলক। এটি যতদিন উন্নয়ন ও অগ্রসরমানতার স্মৃতির্ উৎস হয়ে থাকবে ততদিন একটি সুনির্দিষ্ট ধারাবাহিকতা এই জাতিকে সংহত ও সমৃদ্ধ করে যাবে। এবিষয়ে কোন বিভ্রম অথবা অন্তর্দ্বন্দ্ব আগামী দিনের ইতিহাসগুলোকে নৈরাজ্যকর করে তুলতে পারে। তাই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ধারণা ও আদর্শি্ক বিশ্লেষণাত্নক ও গঠনমূলকভাবে ভবিষ্যৎমুখী করা প্রয়োজন।
কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনোত্তরকালের অতি দ্রুতগামী ময়ের প্রেক্ষাপটে ঐ ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্টতা নানা ক্ষেত্রে নানা ভাবে বিপন্ন ও বিপর্যস্ত হয়েছে। বিস্ময়করভাবে এবং বেদনাদায়কভাবে আমাদের সম্ভাবনার ক্যানভাসটিকে কালিমালিপ্ত করেছে। যে ভাষা আন্দোলনে মুক্তিযুদ্ধের উদ্দীপনার অনুকণা সঞ্চা্লিত হয়েছে । সেই ভাষঅ আন্দোলনের অঙ্গীকারগুলোকে জ্ঞাত অথবা অজ্ঞাতসারে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। কিছু কিছু শক্তিশালী গোষ্ঠী বাংলাভাষাকে শুদ্ধতর ক্ষেত্রে বন্ধ্যা করে তুলেছে। যার প্রতিফলন রয়েছে রাজনৈতিক সংঘাত কাঠামোর উপর।
মুক্তিযুদ্ধ হয়ে উঠেছে স্বপ্ন ও বাস্তবের একটি দোলাচল। সংঘাত রাজনীতির একটি উৎস। এই দোলাচল থেকে নতুন প্রজন্মকে মুক্ত করতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শেষ অবধি আত্না অস্বীকারের চেতনায় পরিণত হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতের বিরোধী বাস্তব রচনা করার জন্যই আমার এই গ্রন্থটির উদ্দেশ্য। মুক্তিযুদ্ধে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন মূলত: প্রত্যক্ষভাবে আদর্শ ও অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাঁদের নানাগোষ্ঠীর অভিজ্ঞতাকে এখানে সংকলিত করা হয়েছে, যাতে করে একটি বিন্যস্ত ছবি তোলা যায়। আর ঐ ছবি থেকে পথচলার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
সূচিপত্র * ১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১: বিজয়ের আনন্দ দেখেছি বাঙ্গালীদের চোখে---এ,কে খন্দকার * মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি---ড. মুহম্মদ ইউনুস * দ্বিতীয় জীবন নিয়ে এখনও বেঁচে আছি--- ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ * সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে----ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী * কি অস্থির দিন গুলো ছিল সেই সময়----ড. শামী্মউজ্জামান বসুনিয়া * ব্রাডফোর্ডের বাংলাদেশীদের একাত্তর: কিছু কথা---ড. এ.কে. এম আব্দুল কাদের * স্মৃতিতে অম্লান শহীদ গিয়াসউদ্দিন আহমেদ---ড. আলাউদ্দিন আহমেদ * মুক্তিযুদ্ধ ও আমি--- ড. মোহাম্মদ মোহাব্বত খান * মুক্তিযুদ্ধ ও নৌ অভিযান--- ড. আলাউদ্দিন আহমেদ * মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্রামগঞ্জ--- এডভোকেট সুলতানা কামাল * একাত্তরের স্মৃতিচারণ----ড. মাহমুদ শাহ কোরেশী * মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় দিনগুলি----মেসবাহ-উস-সালেহীন * স্বাধীনতার ভেতর বাহির----ড. মখদুম-ই-মূলক মাশরাফী * মুক্তিযুদ্ধের ন’মাস----আব্দুল বায়েস * মহাকালের স্থিত অসাধারণ ‘ঊনিশ’শ একাত্তর”-----ড. খুরশীদা বেগম * মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনগুলি-----জামাল উদ্দিন রুমী * স্মৃতিপটে সহপাঠী শহীদ রানা জালাল---আলহাজ্ব মু: জালাল উদ্দিন নলুয়া * ২৪ জনকে একই সাথে গুলি করে হত্যা করা হলো----ড. মুহম্মদ হানিফ আলী