মিথ কি ছেলে-ভুলানো গল্প, অতীতের কল্পকথা? আধুনিক বিশ্বে মিথের কি কোনো প্রাসঙ্গিকতা আছে? নাকি মিথ জীবন ও জগৎ সম্পর্কে নিগূঢ় কোনো বার্তা দেয়? এসব প্রশ্ন আধুুনিক বিজ্ঞানমনস্ক মানবের মনে প্রায়শ উদয় হয়। এই সাক্ষাৎকার গ্রন্থে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম মিথ-গবেষক জোসেফ ক্যাম্পবেল মানবজীবন এবং মিথের মধ্যে অভ্যন্তরীণ যোগসূত্রটি অন্বেষণ করেছেন। মিথ কীভাবে মানুষের অস্তিত্বকে সমৃদ্ধশালী করে এবং অতীত প্রজ্ঞার আলোকে বর্তমানের পথকে আলোকিত করেÑসেই বিষয়টিই উঠে এসেছে জোসেফ ক্যাম্পবেলের সাবলীল উপস্থাপনায়। এখানে রাজা আর্থারের কিংবদন্তি, প্রাচীন শামান-ব্যবস্থা, আদি সভ্যতাগুলোর ধর্মবিশ্বাস যেমন আলোচিত হয়েছে, তেমনি আবার আধুনিক মানবের সংকট, বিবাহব্যবস্থা, তরুণ প্রজন্মের জীবনপথ নির্বাচনের মতো সমসাময়িক বিষয়গুলোও স্থান পেয়েছে। আমাদের অস্তিত্ব, ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং আধ্যাত্মিকতার শেকড় সন্ধানে এই গ্রন্থ যেন স্থান-কালের সীমা পেরিয়ে মানবজাতির বিস্মৃত অতীতের পানে পৌরাণিক অভিযাত্রা। জোসেফ ক্যাম্পবেলের মিথ-বিষয়ক ধ্যানধারণার প্রস্তাবনা হিসেবে গণ্য করা যায় এই গ্রন্থকে। আবার আধ্যাত্মিকতা প্রসঙ্গে তাঁর সংক্ষিপ্ত তবে গভীর ও উদ্দীপনাময় বিশ্লেষণ হিসেবেও বিবেচনা করা যায়। যাই হোক না কেন, জোসেফ ক্যাম্পবেলের মতো বিদগ্ধ মিথ-বিশ্লেষকের হাত ধরে মানবজাতির অমূল্য সম্পদ ‘মিথলজি’র বৈচিত্র্যময় জগতে পরিভ্রমণ করা সবসময়ই রোমাঞ্চকর।