‘সুখ স্বপনে, শান্তি মরণে’ -এ কথা সত্য না হলেও তা এ বাস্তবতারই দলীল যে, পৃথিবীর বুকে সুখ-শান্তি খুব কমসংখ্যক মানুষই লাভ করে থাকে। সুখের জীবন দুটি : ইহলৌকিক ও পারলৌকিক। পরিপূর্ণরূপে ইহলৌকিক অনাবিল সুখ পাওয়া কারো পক্ষে সম্ভব নয়। মুমিন এ জগতে সুখ না পেলেও পরকালের সুখ পাওয়ার আশা করে। পরকালের সুখকে প্রাধান্য দেয়। পরকালের সুখ অনন্ত সুখ। ক্ষণস্থায়ী সুখের বিনিময়ে চিরস্থায়ী সুখের বাসা নষ্ট করে না। এই নৈতিক বাস্তবকে মেনে নিয়েই মুসলিমকে সংসার করতে হয়। জীবনের উত্থান-পতনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মাঝেই সুখের সন্ধান করতে হয়। এই পুস্তকটি আমি আমার থেকে বয়োকনিষ্ঠ দুঃখিত, শোকাহত, মর্মাহত, শোষিত, বঞ্চিত, অত্যাচারিত, নিপীড়িত, পদদলিত, অবহেলিত, অপমানিত, লাঞ্ছিত, অপদস্থ, ভাই-বন্ধুদের হাতে তুলে দিয়ে তাদেরকে প্রকৃত সুখের সন্ধান এবং দুঃখের মাঝে থেকেও সুখের আস্বাদ গ্রহণ কিভাবে সম্ভব তার সন্ধান দিয়েছি। সুখ অর্জনের জন্য করণীয় কর্তব্য এবং বর্জনীয় চরিত্র সম্বন্ধেও কুরআন-হাদীস এবং সালাফে সালেহীন তথা বিশ্বের বিভিন্ন জ্ঞানী-গুণীজনের বাণী থেকে বিবিধ আলোচনা করেছি। বিভিন্ন আরবী বই-পুস্তক পড়েছি তার জন্য। সুখের নিদ্রা ও আরাম বর্জন করেছি সেই মানসে। বইটিকে সমৃদ্ধ করার জন্য কিছু মূল্যবান নীতিকথা চয়ন করেছি জনাব মোহাম্মাদ হাদীউয্যামান কর্তৃক সংকলিত ‘সাগর সেচা মাণিক’ এবং আমার সঞ্চিতা ‘মণির খনি’ থেকে। ‘জ্ঞানের দীনতা এই আপনার মনে পূরণ করিয়া লই যত পারি ভিক্ষালব্ধ ধনে।’ এর দ্বারা যদি তাদের উপকার হয়, যাদের জন্য লিখা, তাহলেই আমার শ্রম সার্থক হবে। আর তারই অসীলায় আল্লাহর কাছে আশা রাখব নেক প্রতিদানের এবং ইহ-পরকালের সুখী জীবনের।