পরিব্রাজকের না বলা কাহিনী কী ভাগ্য! কখন কীভাবে এই গ্রহে অবতরণ করলাম সেটাই রহস্য! গ্রহের নাম পৃথিবী ঘুরছে আর ঘুরছে..... এই পৃথিবী-গাড়িতে চড়ে আমরা সবাই ঘুরছি।* এই পৃথিবীতে অবতরণ করা মাত্রই শুরু হল চলা। বিনা পয়সায় বিনা পরিশ্রমে পৃথিবীর বুকে চড়ে আমরা ঘুরছি। জন্ম থেকেই শুরু হয়েছে আমাদের চলা। সূর্যের দিকে তাকিয়ে ভাবছি সূর্য উঠছে আর ডুবছে আসলে নাগরদোলার মত উঠছি আর নামছি আমরাই। এই চলমান পৃথিবীর বুকে বসে আমরা অভ্যস্থ, ভুলেই গেছি যে আমি এসেছি আবার চলে যাব। আমার মনের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই দানা বেঁধে আছে একটা চিন্তা, এই পৃথিবীতে যখন এসেছি তখন দেখতে হবে, জানতে হবে কোথায় এলাম, অনুভব আর উপলব্ধির শেষে আবার বিদায় জানাবো এই বিস্ময়ে ভরা সুন্দর গ্রহকে। মা-র কথা একদম মনে নেই। বাবা তারও বেশ কয়েক বছর পর দেহত্যাগ করলেন। পুরনো একটা পারিবারিক ফটো স্মৃতিপটে ধরে যতদূর যাওয়া যায় ততদূর গিয়ে পিতৃদেবের হাসিমুখ দর্শন করি সেটাই আমার আশীর্বাদ। ঠাকুরমার মুখে শুনেছি জন্ম কলকাতার দর্জিপাড়ায়, তারপরই সপরিবারে পিতৃদেব চলে আসেন নবাবগঞ্জে, উত্তর চব্বিশ পরগনার ইছাপুর শহর। গঙ্গার ধারে জমিদার বাড়ির মণ্ডল বংশ তখনও ধুমধাম করে দুর্গাপুজো করত। শ্রীরূপদাস মণ্ডল ছিলেন ধার্মিক ও দয়ালু। তাঁকে আমরা কাকাবাবু বলতাম। পিতৃদেবকে সম্ভবত তিনিই দর্জিপাড়া থেকে নবাবগঞ্জে নিয়ে এসেছিলেন এবং তাঁর পলতার পেট্রল পাম্পে কাজ দিয়েছিলেন। গঙ্গার ধারে পেট্রল পাম্প আমার ধূ ধূ মনে পড়ে।