মেগাস্থেনীস ভারত দর্শন শেষে নিজে যে পাণ্ডুলিপিটি তৈরী করেন তার নাম দেন ‘টা ইন্ডিকা (Ta Indica)। খুবই পরিতাপের বিষয় যে ঐ পাণ্ডুলিপিটি এখন আর পাওয়া যায় না, হয় হারিয়ে গেছে নয়তো চিরতরে বিনষ্ট হয়ে গেছে। তবে তার সমসাময়িক বা অব্যবহিত পরের কিছু গ্রীক লেখক যেমন আরিয়ান, স্ট্রাবো, ডায়োডরোস প্রমূখ তাদের লেখা বইসমূহে মেগাস্থেনীসকে উদ্ধৃত করেছিলেন। স্থানে স্থানে টেনে এনেছিলেন টা ইন্ডিকার প্রসঙ্গ। ফলে ঐ সব উদ্ধৃতির মাধ্যমে মেগাস্থেনীসের ‘টা ইন্ডিকা’ সামান্য হলেও বেঁচে আছে। জার্মানীর বন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ই এ শোয়াবেক্ প্রচুর পরিশ্রম করে বিভিন্ন লেখকের লেখার মধ্য থেকে মেগাস্থেনীসের উদ্ধৃতাংশ জুড়ে জুড়ে ‘মেগাস্থেনীস ইন্ডিকা’ নামক একটি বই প্রকাশ করেন ১৮৪৬ সালে। বইটি প্রকাশ হবার সঙ্গে সঙ্গে বেশ সাড়া পড়ে যায়। মি. ম্যাককিন্ডুলকৃত তার একটি ইংরেজি সংস্করণও বেরিয়ে যায় ১৮৮৮ সালে যা কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। এই উদ্যেগের ফলে প্রাচীণ ভারত সম্পর্কে প্রামাণ্য তথ্য জানার সুযোগ সৃষ্টি হল। সেই সময় বাঙালীদের মধ্যেও এই বিষয়ে জানবার ঝোঁক দেখা গিয়েছিল। তবে বাংলা ভাষায় এই বই তখন ছিল না। বরিশালের প্রতিভাবান লেখক ও অনুবাদক রজনীকান্ত গুহ ছিলেন গ্রীক ও ইংরেজী ভাষার সুপন্ডিত। তিনি অনেকটা স্বপ্রবৃত্ত হয়ে এই বইটি মূল গ্রীক থেকে বাংলায় অনুবাদ করেন।