রাজা বীরবলের আসল নাম ছিল মহেশ দাস। কারো কারো মতে বহ্মদাস। তার ডাক নাম ছিল বুরাইয়া। তিনি উত্তর প্রদেশে যমুনা নদীর তীরে টিকওয়ানপুর গ্রামে ১৫২৮ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল গঙ্গা দাস আর মায়ের নাম আনভা দেবী। তারা ছিলেন ভাট বাহ্মণ। ছোটো বেলায় মহেশের মা মারা যায়। তারা বাবার সাথে বেনারসের কপিলাবস্তু এলাকায় বসবাস করতেন। তার বাবা ছিলেন স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান। রাজা-বাদশা ও আমির-ওমরাহগণকে গান, কবিতা, শ্লোক, কৌতুক ইত্যাদি শুনিয়ে মনোরঞ্জন করে সামান্য আয় করতেন আর তা দিয়েই তাদের সংসার চলতো। তারা ছিল খুব গরিব। মহেশ ছোটো বেলা থেকেই বাবার পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। কিন্তু তিনি ছিলেন অসাধারণ মেধাবী ও বুদ্ধিমান। তিনি ভালো গান গাইতে পারতেন। তার গলা ছিল মধুর। তার কাব্যখ্যাতিও ছিল অসাধারণ। প্রথমে তিনি মধ্যপ্রদেশের মেওয়ার রাজপুত রাজা রামচন্দ্রের রাজসভায় ব্রাহ্মকবি ছিলেন। সেখান থেকে তিনি দিল্লি চলে যান। সেখানে তিনি কবি, গায়ক ও কমেডিয়ান হিসেবে প্রভ‚ত প্রতিপত্তি অর্জন করেন। এভাবে তিনি সম্রাট আকবরের নজরে আসেন। আকবর তাকে তার রাজসভায় কবি ও ভাঁড় হিসেবে নিয়োগ দেন। বীরবল তার আপন মেধা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সম্রাটের মন জয় করে নেন। রাজসভায় তার প্রভাব ও প্রতিপত্তি বেড়ে যায়। একসময় তিনি আবুল ফজলকে টেক্কা দেবার মত অবস্থানে চলে যান। আকবর যখন তার নতুন ধর্ম দ্বীন-ই-ইলাহী প্রবর্তন করেন তখন বীরবল প্রথম হিন্দু হিসেবে তার এ ধর্মগ্রহণ করেন। স¤্রাটের নবরতড়ব সভার অন্যতম রতড়ব বীরবল ছিলেন সম্রাটের অত্যন্ত প্রিয়ভাজন ও ঘনিষ্ঠ। সম্রাট তাকে দুই হাজারি মনসবদারী প্রদান করে রাজা উপাধিতে ভ‚ষিত করেন। খ্যাতি অর্জন করতে না পারলেও বীরবল এ সময় বিভিনড়ব অভিযানে নেতৃত্ব দেন। ঐ সময় উত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের সোয়াত এলাকায় আফগানরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এ বিদ্রোহ দমনের জন্য আবুল ফজল যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু আকবর আবুল ফজলের পরিবর্তে বীরবলকে প্রেরণ করেন বিশাল ক্সসন্যদলের সেনাপতি হিসেবে। ওখানে আফগানদের গেরিলা আμমণে বীরবল ১৫৮৬ খ্রিষ্টাব্দে নিহত হন। বীরবল হিন্দি, সংস্কৃত ও ফার্সিসহ বিভিনড়ব ভাষায় সুপÐিত ছিলেন। উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রত্যুৎপনড়বমতিত্বের গুণে বীরবল ছিলেন আকবরের সার্বক্ষণিক সহচর। তার রচিত বিভিনড়ব গল্প কাহিনি এবং তাকে কেন্দ্র করে মুখে মুখে প্রচলিত লোককাহিনি দিনে দিনে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। তার এসব বুদ্ধিদীপ্ত কৌতুক ও গল্প আজও আমাদের সমাজে ব্যাপক জনপ্রিয়। --সম্পাদক
আদিত্য অনীক বর্তমান বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল কবি, ঔপন্যাসিক এবং ছড়াকার । তার জন্ম ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছায় । কর্মজীবনের পাশাপাশি সাহিত্য চর্চা চালিয়ে গেছেন নীরবে । সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার দৃপ্ত পদচারণা । বিগত পনেরো বছর যাবৎ তিনি সাহিত্যের সকল মাধ্যমেই অনবরত লিখে যাচ্ছেন । তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ সমুহ হলো:- বেদনার নিঃশব্দ কোলাহল, পাললিক গেরস্থালি, সীমানা বাড়িয়ে দাও, নিষিদ্ধ নন্দিনী ইত্যাদি । উপন্যাসসমূহের মধ্যে আকাশ প্রিয়তি, উত্তরের সেক্টর, টাঙ্গুয়ার প্রেতাত্মা, পাহাড় নদী ও মাধবী, ইবনে বতুতার দাসী, অভিসার, প্রত্যাশা এখন হৃদয়ের কাছে ইত্যাদি । নীল কঠুরির ভুত ও ভয়ঙ্কর মধুপুর তার কিশোর উপন্যাস । ভালো খোকা , ছন্নছাড়া ছড়া তার ছড়া গ্রন্থ । এ ছাড়া , আদিত্য অনীকের অনুকাব্য, ঋদ্ধ কৃষ্ণচূড়া তোমাকে ইত্যাদি তার বিশেষায়িত কাব্যগ্রন্থ ।