জাহান্নাম-ভীতি হলো এমন এক ভয় যা আমাদের সফলতার পথ দেখায়। আমাদের দুনিয়ার জীবনকে করে নিয়ন্ত্রিত। হাসান বাস্রি (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘আল্লাহর শপথ! মানুষকে জাহান্নামের চেয়ে ভয়ানক আর কোনোকিছুর মাধ্যমে সতর্ক করা হয়নি।’ কিন্তু জাহান্নামের এই ভয়াবহতা নিয়ে আমরা আসলেই কি চিন্তাভাবনা করি? নাকি আলো ঝলমলে দুনিয়ার ধোঁকায় ভাবনার সময়টুকুও আমাদের হয়ে ওঠেনা? স্বয়ং রাসূল (সাঃ) জাহান্নামের আগুন থেকে আল্লাহর কাছে মুক্তি চাইতেন। আর সাহাবিগণও জাহান্নামের বাস্তবতা নিয়ে সীমাহীন ভয়ে থাকতেন। অথচ এ চরম বাস্তবতা নিয়ে আমাদের রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত উদাসীনতা। জাহান্নামের বাস্তবতা যে কতটা ভয়ংকর তা বুঝতে পারলে পাপ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়। তখন পাপ করার আগে অসহনীয় শাস্তি—যাক্কুম, কাঁটাযুক্ত খাবার, উত্তপ্ত পানি, লোহার শেকল, পুঁজ ও রক্তের নালার কথা বারবার মনে পড়তে থাকে। পূর্ববর্তীদের অনেকেই জাহান্নাম নিয়ে এত বেশি চিন্তিত ছিলেন যে, তাদের কেউ কেউ কামারের আগুন জ্বালানোর হাপর দেখেও প্রচুর কান্না করতেন। তাঁরা জাহান্নাম নিয়ে ভয়ে থাকতেন। কারণ যারা জান্নাতে যাবে, তারা বলবে, “ইতঃপূর্বে আমাদের পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে থাকাকালে আমরা ( আল্লাহর পাকড়াওয়ের ব্যাপারে) বড়ো ভয়ের ভেতর ছিলাম (সূরা তূর, ৫২ : ২৬) । জাহান্নামের ভয় দুনিয়ার জীবনে রক্ষা করবে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে এবং আখিরাতের জীবনে জাহান্নাম থেকে। “জাহান্নামের ভয়াবহতা” এমনি একটি বই যা জাহান্নামের ভয় ও জান্নাতের আকাঙ্ক্ষা তৈরি করবে। জাহান্নামের বিভীষিকা নিয়ে বাংলাভাষায় অনূদিত এই গ্রন্থটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ কিতাব বলা যায়। ৬৫০ বছর পূর্বে রচিত এই বইয়ে রয়েছে– জাহান্নামের গর্জনধ্বনি ও লেলিহান অগ্নিশিখা, শাস্তির সরঞ্জাম, জাহান্নামের খাবার-পানীয়, পোশাক-পরিচ্ছদ, জাহান্নামের ধরন ও শ্রেণিবিন্যাস, মনীষীদের জাহান্নাম ভীতি, জাহান্নাম থেকে বাঁচার উপায় সহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো বিষয়ের প্রাঞ্জল বর্ণনা। বইয়ের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় পাঠক কখনো থমকে যাবেন জাহান্নামের সূক্ষ্ম বর্ননাগুলো জেনে। আবার কখনো কুরআন ও হাদীসের আলোকে নিকৃষ্ট জাহান্নাম থেকে বেঁচে থাকার উপায়গুলো জেনে আশান্বিত হবেন।