সৈয়দ মনজুর কবিরের ছড়ার বই ‘আম্মুলি ও টোপলার ছড়া-৭’। ছন্দে ছন্দে কথা বলার মধ্য দিয়েই ছড়ার প্রচার ও প্রসার ঘটে। ছড়া অনেক সময় অর্থবোধক হয়, আবার অনেক সময় কোনো অর্থ বহন না করলেও একধরনের মজা পাওয়া যায়। বাংলা ভাষায় বিচিত্র রকমের ছড়া আছে। এসব ছড়ার বিষয় ও বৈচিত্র্যও অদ্ভুত। ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে ছড়া অনেক সহায়ক। ছড়া শিশু-কিশোরের মেধা ও বুদ্ধির বিকাশ ঘটাতেও অত্যন্ত কার্যকর। সৈয়দ মনজুর কবিরের ছড়াগুলোর নানা রকম বিষয়-বৈচিত্র্য লক্ষণীয়। ফাগুন বাংলা মাসের একটি উল্লেখযোগ্য মাস। এ মাসে ফোটে পলাশ ফুল। এই পলাশ ফুলকে নিয়ে রয়েছে এ বইটির প্রথম ছড়া। ‘মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকি পলাশ পলাশ তোমায় ডাকি। ফাগুন এলেই ওঠো হেসে রাঙিয়ে বন সবুজ দেশে।’ এ ছাড়াও বইটিতে রয়েছে কদম ও শিম ফুল নিয়ে দুটি ছড়া। ‘বোকার চাওয়া’ একটি চমৎকার ছড়া এ বইয়ের। খাবার নিয়ে প্রায় সব বাচ্চার মধ্যেই একটা অনীহা ভাব কিংবা উদাসীনতা দেখা যায়। এ নিয়ে মা-বাবারা সব সময় তটস্থ থাকে। সময়মতো সঠিক পরিমাণে না খেলে দেহ-মনের বৃদ্ধি ঘটে না। বাড়ে না বুদ্ধি। তাই না খাওয়া খোকাদের নিয়ে ছড়াকার লিখেছেন― ‘খাবার আনো, খাবার আনো পেট ভরেনি খোকার আনো দুটো দৈত্য-দানো মধু ভোমরা পোকার।’ ‘বাঁশের বাঁশি’ ছড়াটি বাঁশিকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন। বাঁশির পেছনের কারিগর হলো বাঁশিওয়ালা। তার দক্ষতায়ই বাঁশিতে মধুর সুরের ধ্বনি মেলে। এ বাঁশিই তার জীবন-জীবিকার ধারক। যখন বাঁশির সুর শুনে একটি বাঁশি আমরা কিনে নিই তখনই বাঁশিওয়ালার ঘরে হাসি ফোটে। ‘মধুর সুরের মনটি ভরে কিনলে বাঁশের বাঁশি বাঁশিওয়ালার ফুটত ঘরে সোনার মুখে হাসি।’ ছড়ার কেবল ছন্দ আর শব্দের ব্যঞ্জনাই বড় কথা নয়। ছড়ার মধ্য দিয়ে অনেক বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায় শিশুমনে। ১৬ পৃষ্ঠার এ বইটিতে রয়েছে ১৪টি ছড়া। প্রতিটি ছড়াই ছড়িয়ে দেয় নানা বার্তা আর ভালো লাগার অনুভ‚তি। প্রতিটি ছড়ার সাথেই রয়েছে দারুণ সব রঙিন ছবি। ছবি আর ছড়ার মেলবন্ধনের এ বইটি শিশু-কিশোরের হাতে তুলে দিলে তাদের খুশির আর সীমা থাকবে না নিশ্চয়ই।