গুলুগুলু শব্দটি সাধারণ আদরের প্রকাশ ঘটাতে ব্যবহার করা হয়। আর শিশু-কিশোরদের জন্য তো বড়দের রয়েছে অনেক অনেক আদর। রেবেকা ইসলামের ছড়ার বই ‘গুলুগুলু’তে আছে শিশু-কিশোরদের জন্য অনেক অনেক আদুরে ছড়া। বইয়ের একটি ছাড়ার নাম ‘আদুর ছড়া’। ছড়াটিতে ছড়াকার রেবেকা ইসলাম লিখেছেন― হাতের কাছে পেয়ে একটা/সোনার কাঠি জাদুর সেদিন ভোরে চক্ষু দুটো/গোল্লা হলো আদুর। করল পূরণ ইচ্ছেগুলো/খাবার এলো যেই না ছুঁলো, বিছনা হলো তুলো তুলো/তার ওপরে যখন শুলো আচমকা তার ঘুম ভেঙে যায়/ধাক্কা খেয়ে দাদুর আদু দেখে শুয়ে আছে/পিঠের নিচে মাদুর। এ রকম স্বপ্নে-কল্পনায় আমরা কত কী দেখি। আসলে আমরা যখন নানা রকম গল্প শুনি, টিভিতে বিভিন্ন কার্টুন, সিনেমা দেখি সেগুলো আমাদের মনোজগতে আলোড়ন তোলে। আমরা একসময় সেসব চরিত্র হতে চাই। কত রকম ইচ্ছে জাগে মনে। যদি উড়ে যাওয়া যেত, যদি চাঁদের সাথে কথা বলা যেত, যদি ফুলের সাথে প্রজাপতি হয়ে খেলা করা যেত। এমন সব নানা ইচ্ছে মনের কোণে উঁকিঝুঁকি দেয় সারাক্ষণ। শিশুদের জন্য এমন মিষ্টি ছড়া খুব একটা পাওয়া যায় না। বইয়ের নামকরণ হয়েছে যেই ছড়াটি দিয়ে সেই ছড়াটি পড়া যাক― গুলুগুলু চেহারাটা/তুলতুলে গাল ফোলা ফোলা ঠোঁট দুটো/টকটকে লাল। গুটিগুটি পায়ে হাঁটে/ছোট ছোট শ্বাসে চুকচুক দুধ খেতে/খুক খুক কাশে। আধো আধো কথা বলে/ফিকফিক হাসি খুব খুব ভালোবাসে/পুঁক পুঁক বাঁশি। গোল গোল চাঁদে দেখে/ঘুম ঘুম চোখে উম উম চুমু দেই/রোজ রোজ ওকে। ছোট্ট শিশুর আনন্দে ছড়া লাগে, কান্নায় ছড়া লাগে, যখন সে খেতে চায় না তখন ছড়া লাগে, যখন ঘুমাতে চায় না তখন ছড়া লাগে। আসলে ছড়ার বিকল্পও ছড়া। ছড়ায় ছড়ায় ভরা এই ১৬ পৃষ্ঠার রঙিন বইটি এককথায় অসাধারণ। চমৎকার ছবির সাথে ছড়াগুলো সাজানো হয়েছে। বইটিতে মোট ১৪টি ছড়া রয়েছে। ছড়াগুলো হলো―আঁকাআঁকি, সারাবাড়ি টইটই, আদুরে ছড়া, শেয়াল মাস্টারের ছড়া, বিষ্টি, হিজিবিজি, গুলুগুলু, কত্ত কিছু আঁকে, তিয়ামণির দুইটা পুতুল, নাগরদোলা, ধাঁধা, খুকুর পুতুল, দুষ্টটা এবং রূপুর জন্মদিনে।