“কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের এক অনন্য কার্যক্রম। কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট। এ কার্যক্রমের ভেতর। দিয়ে দেশের কৃষিজীবী জনগােষ্ঠী কণ্ঠ ছেড়ে কথা বলার। সুযােগ পেয়েছেন। এই বাংলায় কৃষকেরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক বিদ্রোহ করেছেন, সংগ্রাম করেছেন; কিন্তু কোনােভাবেই শােষণের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে। আসতে পারেন নি। একসময় তাদের থাকতে হয়েছে। বিদেশি প্রভু ও সামন্ত জমিদার শ্রেণীর ক্রীড়নক হয়ে, পরবর্তীতে স্বাধীন দেশেই তারা হয়েছে দাবার ঘুটি। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান একটি দেশ, কৃষি আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি, কিন্তু কৃষিকে আমরাই আড়াল করে রাখছি। রাষ্ট্রের বহুমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা, নীতি নির্ধারণ ও জাতীয় বাজেটে কৃষি ও কৃষকের তেমন। কোনাে অবস্থান নেই। এই উপলব্ধি থেকেই ২০০৫ সালে শাইখ সিরাজ শুরু করেন কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট। যা প্রতি বছর জাতীয় বাজেটের আগে দেশের কৃষক ও রাষ্ট্রের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করে আসছে। এই কার্যক্রমটি সরকারের কাছে যেমন দারুণ গ্রহণযােগ্য। একটি তৎপরতা হিসেবে মূল্যায়িত হচ্ছে, একইভাবে বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে শুরু করে নানা দেশের গবেষক ও নীতিনির্ধারকের কাছেও এটি গণ্য হচ্ছে সরেজমিন ও বাস্তবমুখী একটি গবেষণা হিসেবে। এই গ্রন্থটি শাইখ সিরাজের ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ কার্যক্রমের একটি লিখিত সংস্করণ। এদেশের কৃষকের প্রাত্যহিক হিসাব-নিকাশের এমন চুলচেরা ও ব্যাপক তথ্য এর আগে এক মলাটের। ভেতর পাওয়া যায় নি। গবেষক ও নীতি বিশ্লেষকের জন্য। এটি হতে পারে সবচেয়ে সহায়ক গ্রন্থ। আর যারা এদেশের। কৃষি জীবনের সমস্যা-সম্ভাবনা ও পাওয়া না-পাওয়ার। আজকের চিত্র খুঁজছেন, এমন অকপট কথা, এমন জবাবদিহিতার দাবি আর কোথাও পাবেন মনে হয় না।
Shykh Seraj কৃষি সাংবাদিকতায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় পুরস্কার জাতিসংঘের এ এই বুর্ম অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের জন্ম ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৫৬, চাঁদপুরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ভূগোলে। ছাত্রজীবনেই সম্পৃক্ত হন গণমাধ্যমের সঙ্গে । টেলিভিশন জীবন শুরু করেন সত্তরের দশকের শেষ দিকে। ১৯৮২ সাল থেকে একটানা ১৪ বছর করেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষ’। সেই থেকে দেশব্যাপী পরিচিতি মাটি ও মানুষের শাইখ সিরাজ হিসেবে। ১৯৯৫ সালে ৩৯ বছর বয়সে উন্নয়ন সাংবাদিকতায় পান সর্বোচ্চ রাষ্ট্ৰীয় পুরস্কার একুশে পদক। ১৯৯৬ সালে তিনি অন্যতম অংশীদার হিসেবে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল চ্যানেল আই প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ২০০৪ সাল থেকে চ্যানেল আইতে শুরু করেন কৃষি ও কৃষকের জন্য গণমাধ্যম কার্যক্রম “হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ এবং “হৃদয়ে মাটি ও মানুষের ডাক' । ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তার উপস্থাপিত ও পরিচালিত অনুষ্ঠান “কৃষি দিবানিশি শুরু হয়। একইসঙ্গে তিনি মুদ্রণ মাধ্যমেও চালু রেখেছেন কৃষি সাংবাদিকতা। ২০০৭ সালের ৩ আগস্ট থেকে দৈনিক ইত্তেফাক-এ বিশেষায়িত ও পূর্ণাঙ্গ কৃষিপাতা সম্পাদনা শুরু করেন। নব্বইয়ের দশক থেকে লিখে চলেছেন কৃষি ও গণমাধ্যম বিষয়ক নিবন্ধ। জাতীয় পর্যায়ে এ পর্যন্ত পুরস্কার পেয়েছেন অর্ধশতাধিক। পেয়েছেন অনেক আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও পুরস্কার। শাইখ সিরাজ যুক্তরাষ্ট্রের অশোকা ফাউন্ডেশনের একজন ফেলো। তিনি দেশের প্রথম ডিজিটাল স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আই' এর পরিচালক ও বার্তা প্ৰধান। শাইখ সিরাজের জীবন ও কর্ম নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের অর্ধশতাধিক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বের নিবন্ধ সংকলন "সান অব দ্য সয়েল”।