চব্বিশটি কাব্য বাংলা কবিতায় হারিসুল হক-এর পথকে প্রজ্বালিত করে। সৃজনের উন্মাদনা থাকলেও কোন উল্লম্ফন নেই কবি হারিসুল হক-এর মধ্যে, তাঁর কাব্যযাত্রা স্বতস্ফূর্ত ও সাবলীল। প্রস্তুতি নিয়েই কবিতার নন্দনকাননে তাঁর প্রবেশ, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়েই পথে পথে তাঁর নিরন্তর বাঁকবদল। হারিসুল হক যে আপাদমস্তক কবি, সেই অনুভব তাঁর কবিতার কারুকাজে নিহিত। আর এই অনুভবনিচয় হারিসের কবিতাকে করে তুলেছে মহার্ঘ। যথার্থ শব্দ-নির্বাচনে কিংবা ছন্দের স্বচ্ছন্দ ব্যবহার হারিসের কবিতা অনবদ্য। আর একজন প্রকৃত কবির মতই হারিসুল হক-এর যাত্রা প্রলোভনহীন, স্বচ্ছন্দ। 'আমি অভিসারে যাবো' কাব্যেও মাধ্যমে যে কবির যাত্রারম্ভ, কবিতার গহীন অরণ্যে একান্তে পথ করে করে তাঁর নিরন্তর নতুন ভাবনা ও প্রকরণ অন্বেষণ। 'ফিরে চাও পবিত্র পাখি', 'জলের পুতুল', 'তিরোহিত স্বপ্নের চাদর', 'আড়ালের মাছগুলো' 'আমার সমগ্র চর' এর মত হারিসের প্রায় সব কাব্যে মুদ্রিত আছে অসংখ্য মহার্ঘ কবিতা। এইসব কবিতায় বিমূর্ত সমকাল যেমন বাঙ্ময়, তেমনি ভাবীকালের সত্য অনুভবগুলোও ইঙ্গিতময়। হারিসের কবিতায় আছে ইতি ও নেতির মৈথুন, গ্রাম ও নগরের মিথস্ক্রিয়া, সাধু ও চলিতের বোলচাল, প্রেম ও বিরহের উন্মীলন, এমনকি রয়েছে সত্য ও মিথ্যা বেসাতি। এসবই জারিত হয়ে হারিসুল হক-এর কবিতার রূপায়ণ। হারিসের কবিতায় আছে শব্দের স্বয়ংক্রিয় বিন্যাস ও বোধের অন্তলীন পরম্পরা। জয়তু, কবি হারিসুল হক।