“অন্ধকারের ঘনত্ব আরো তীব্রতর হতেই কিছু বাদুর বিকট সূর করে মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেলো। এরপর আবার সব চুপচাপ। আবারো গা ছমছমে পরিবেশ। একাকী মেয়েটি অসহায়ভাবে চারিদিক পর্যবেক্ষণ করছে। এরপর এগিয়ে চলছে আপন মনে। খানিক বাদেই তার মনে হতে লাগলো কেউ তার পিছু নিয়েছে। মনে হচ্ছে ঘৃণা ক্রোধের সম্মেলনে ভাবলেশহীন একজোড়া চোখ তাকে অনুসরণ করছে। মাঝেমাঝে কিছু কান্না মিশ্রিত কোলাহল তার কানের কাছে বারবার প্রতিধ্বনি হচ্ছে। এতক্ষণ ভয়হীন থাকলেও এই প্রথম ভয়ার্ত হলো সে। চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে আছে। তীব্র গতিতে নিঃশ্বাস ওঠানামা করছে। মেয়েটি পেছন ফিরে সমস্তটাতে অত্যন্ত সতর্ক দৃষ্টিতে চোখ বুলিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে দ্রুত হাঁটা শুরু করলো। হঠাতই যেন মনে কোথা থেকে যেন একবুক সাহস এসে ভর করল। একলা পথে নিজেই যেন নিজের সাহস হয়ে উঠতে হয়। হঠাৎ কিছু একটা দেখতে পেয়ে কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়িয়ে রইলো। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামের রেখা দেখা দিলো। শরীরের সমস্ত রক্ত যেন হিম হয়ে গেলো। প্রচন্ড শক্তিতে চিৎকার করার চেষ্টা করলো। অদ্ভুত ব্যাপার,তার গলা দিয়ে কোনো স্বর বেরুচ্ছে না। কেউ যেন তার কন্ঠটা চেপে ধরে আছে। বেঁচে থাকার জন্য শরীরের সঞ্চয়কৃত সমস্ত শক্তি খাটিয়ে হা করে নিঃশ্বাস নেওয়ার আপ্রাণ করতে লাগলো। বেঁচে থাকার আকুতি প্রকাশের মতো কিঞ্চিৎ শব্দও গলা দিয়ে বের হচ্ছে না। নিজের জীবনের সাথে বিশ্রী কিছু একটা ঘটতে দেখছে স্বচোক্ষে।”