গত শতাব্দীর শেষ দুটি দশক থেকে আজ পর্যন্ত এই নিরীহ কিন্তু বীর, নিঃস্ব কিন্তু আত্মর্মযাদাশীল জাতির বিরুদ্ধে সর্বজনীন ধারাবাহিক বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেড চালানো হয়েছে। তাদের জাতিসত্তার গৌরবময় ইতিহাসকেও নানা কায়দায় মুছে ফেলতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বুদ্ধিবৃত্তিক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে; কিন্তু...কিন্তু হাজার বছরের ইতিহাস বলে ভিন্ন কথা। আলেকজান্ডার, তাতার আগ্রাসন, তৈমুরি ধ্বংসযজ্ঞ, তিনবারের অ্যাংলো-আফগান যুদ্ধ, কমিউনিস্ট সোভিয়েত এবং সব শেষে ইউরোপ-আমেরিকা- ন্যাটো—কেউ-ই তাদের হীন চক্রান্ত ও কাঙ্ক্ষিত প্রকল্প এই ভূমিতে বাস্তবায়ন করতে পারেনি। প্রতিটি শক্তিকেই এই জাতি কেন যেন ইতিহাস থেকে তাদের দার্শনিক ভিত্তিসহ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। কারা এই জাতি? ইসলামের সঙ্গে তাদের কী সম্পর্ক? সেই আরব উপদ্বীপ থেকে কীভাবে ইসলাম এখানে তার সর্বজনীন প্রভাব বিস্তার করল? এই ভূমির প্রচণ্ড আত্মমর্যাদাশীল অধিবাসীরা কীভাবে ইসলামকে তাদের জীবনাচরণ হিসেবে গ্রহণ করল? ইসলামই-বা কীভাবে তাদের হৃদয়মনে প্রবেশ করল? কোন সে আদর্শ আর শক্তি, যা হাজার বছর ধরে হিন্দুকুশ আর হিমালয় পাদদেশের অধিবাসীদের ইসলামের সঙ্গে এমন শক্তিশালী বিশ্বাসের বন্ধনে আবদ্ধ রেখেছে? বিজয়ী এই জাতিকে জানতে হলে আপনাকে এই গ্রন্থ অবশ্যই পড়তে হবে। এটি কোনো উপন্যাস বা থ্রিলার নয়, রক্তমাংসে অপরাজেয় আর জীবন্ত একটি জাতির প্রায় ২ হাজার বছরের জ্বলন্ত ইতিহাস।
নাম মুহাম্মদ ইসমাইল। ‘ইসমাইল রেহান’ তার কলমি নাম। হাফেজ, মাওলানা। জন্মেছেন করাচীতে। পহেলা ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১। বাবা আব্দুল আজিজ। তার পূর্বপুরুষরা দেশভাগের সময় ইসলামি দেশে বসবাসের জন্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাকিস্তানে হিজরত করেন। করাচীর পুরনো গোলিমার এলাকায় বড় হয়েছেন। মায়ের কাছে দ্বীনিয়াত বিষয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় স্কুলে ফরমাল এডুকেশন গ্রহন করেন। ১৯৮৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ভর্তি হন দারুল উলুম করাচীতে। বাহাদুরাবাদের জামেয়া মা’হাদুল খলীল আল ইসলামী থেকে ১৯৯৫ সালে তাকমীল সমাপন করেন। এর মাঝে আল্লামা আবদুর রশীদ নু’মানীর শিষ্যত্ব অর্জন করেন। তারপর ২০০৬ সালে করাচী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে বি.এ (সম্মান) এবং ২০১০ সালে করাচীর উর্দু বিশ্ববিদ্যালয় (FUUAST) থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি সমাপ্ত করেন। দীর্ঘ দুই দশক ধরে শিক্ষকতা করে আসছেন। ‘যরবে মুমিন’ ও ‘রোজনামা ইসলাম’ পত্রিকায় কলাম লিখে বিখ্যাত হয়েছেন। ২০০৬ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত মাসিক সুলূক ও ইহসান পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। শিশুদের জন্য প্রকাশিত একটি পত্রিকা ‘বাচ্চোঁ কা ইসলাম’ ও নারীদের নিয়ে প্রকাশিত ‘খাওয়াতিন কা ইসলাম’ পত্রিকার সম্পাদনা র সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।