সাহিত্য পাঠ আনন্দদায়ক। সাহিত্যের নানা বিষয় বৈচিত্র্য সম্বন্ধে ধারণা সাহিত্য পাঠকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। শিক্ষার্থী বিশেষ করে সাহিত্য- শিক্ষার্থীদের জন্য বিষয়টি অধিক গুরুত্ববাহী এবং অপরিহার্য। কিন্তু আমাদের দেশে এই বিষয়ে কোনো বই নেই। এই প্রয়োজনের তাগিদেই বর্তমান প্রয়াস। সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে বর্তমান বইয়ে। নতুন কোনো সংজ্ঞা নয়, প্রচলিত সংজ্ঞাকে যথাসাধ্য সহজবোধ্য করে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। কোনো বিষয়ে প্রচলিত একাধিক মতের মধ্য থেকে অধিকগ্রাহ্য বিবেচিত মতকেই গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিহাসের প্রয়োজনে কিছু নতুন বিষয়ও এসেছে। যথাসাধ্য যুক্তিনির্ভর এবং বাস্ত বানুগ দৃষ্টিতে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে সেইসব বিষয় । এর বাইরে রয়ে গেছে আরও নানা বিষয়। আলোচিত কোনো বিষয় সম্পর্কেও থাকতে পারে আরও নানা মত। সে সম্পর্কে সুধী পাঠকের সহৃদয় মতামত ও পরামর্শ পেলে কৃতজ্ঞ থাকব। কোনো বিষয়ের সংজ্ঞা উপস্থাপন পরে আলোচনা নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমে সংজ্ঞায় উপনীত হবার রীতি অনুসৃত হয়েছে বর্তমান গ্রন্থে। সনেট ও অন্যান্য কবিতার মিলবিন্যাস আলোচনা ক্ষেত্রে প্রচলিত ক খ গ ঘ এর পরিবর্তে ১ ২ ৩ ৪ সংখ্যার ব্যবহার করা হয়েছে—শিক্ষার্থীদের বুঝতে সহজ হবে এ ধারণা থেকেই। বিষয়সমূহকে সাজানো হয়েছে কালানুক্রমিক ধারায়। শুধু ‘প্রবন্ধ’ এর ব্যতিক্রম। বিভিন্ন বিষয়ের শ্রেণিবিভাগের ক্ষেত্রে অনুসৃত হয়েছে বাংলা বর্ণানুক্রমিক ক্রমধারা। উদ্ধৃত গ্রন্থনামের সামনে বন্ধনীতে যথাসম্ভব ঐ গ্রন্থের প্রথম প্রকাশের সময় উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমান গ্রন্থ রচনায় দেশী বিদেশী নানাজনের বই থেকে সাহায্য নেয়া হয়েছে নির্দ্বিধায় । সুহৃদ বন্ধুদের ঐকান্তিক উৎসাহে এই প্রচেষ্টা বাস্তবায়ন সম্ভব হলো। সহৃদয় বন্ধুরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে গ্রন্থের সৌষ্ঠব বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছেন। এঁদের ঋণ অপরিশোধ্য । পরিশেষে এই বই পাঠক, নবীনলেখক, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করলেই শ্রম সার্থক বিবেচিত হবে। কারণ, টলস্টয়ের বিখ্যাত উক্তি ‘বইয়ের ভাগ্য নির্ভর করে পাঠকের মগজের ওপর'—কথাটি চিরসত্য
অধ্যাপক ও সাংবাদিক। ১৯৬৮-তে বাংলা ভাষা-সাহিত্যের অধ্যাপনায় যোগদান। বরিশাল সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ও ব্রজমোহন কলেজ এবং খুলনা ব্রজলাল কলেজে চাকরি শেষে অবসর গ্রহণ জানুয়ারি ২০০৪-এ। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখি ও সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে দৈনিক বাংলাদেশ সময়-এর নির্বাহী সম্পাদক। কাজ করেছেন সাহিত্য-তত্ত্ব নিয়ে। লিখেছেন সাহিত্য স্বরূপ, সাহিত্য-সংজ্ঞা, অভিধান, ছন্দ অলঙ্কার রস-তত্ত্ব। এই সূত্র ধরেই প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সাহিত্য-তত্ত্ব সন্ধান। অনুবাদ করেছেন প্লেটোর কাব্য-ভাবনা, এরিস্টটলের পোয়েটিকস, হোরেসের আর্স পোয়েটিকা এবং লঙ্গিনাসের সাহিত্য-তত্ত্ব। এই চার যুগন্ধর পণ্ডিতের সাহিত্য-তত্ত্ব সমন্বয়ে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ধ্র“পদী সাহিত্য-তত্ত্ব। আরও অনুবাদ করেছেন এম এন রায়ের ইসলামের ঐতিহাসিক ভূমিকা ও নয়া মানবতাবাদ; র্যালফ ফক্স-এর উপন্যাস ও জনগণ এবং ই এম ফরস্টারের উপন্যাসের যত বিষয়। সম্পাদনা করেছেন অশ্বিনীকুমারের রচনাসংগ্রহ, মুকুন্দদাসের যত লেখা, মুকুন্দদাসের দেশগান, চারণকবি মুকুন্দদাস প্রসঙ্গ, মাইকেল মধুসূদন দত্ত-র প্রহসন, পরশুরাম ও তার গড্ডালিকা, সত্যেন সেন ধ্র“পদী গণ-কথাশিল্পী, অগ্রন্থিত রণেশ দাশগুপ্ত ইত্যাদি গ্রন্থ।