।। তোমাকে বলছি সিরিজ- ৫ম খন্ড ।। দাম্পত্যজীবন সম্পর্কে আলোচনা করার পূর্বে ইসলামপূর্ব সমাজ-সভ্যতায় নারীদের অবস্থান কী ছিল; তা জানা থাকতে হবে। পৃথিবীর ইতিহাস সামনে রাখলে একথা চোখ ধাঁধিয়ে পরিস্কার হয়ে ওঠে যে, ইসলামপূর্ব যুগের নারীরা নিজেদের মৌলিক অধিকারটুকুও পেত না। সবদিক থেকেই তারা ছিল লাঞ্চিত ও বঞ্চিত। ফ্রান্সে তাদেরকে ‘অপূর্নাঙ্গ মানুষ' হিসেবে বিবেচনা করা হত। বলা হত, এরাই সকল সামাজিক অনাচারের মূল। চীনারা মনে করত, এরা শয়তানের অপবিত্র আত্মা। মানুষকে রকমারি অকল্যাণের পথে এরাই নিয়ে যায়। জাপানিদের ধারণা ছিল, নারীরা সৃষ্টিগতভাবেই অপবিত্র। এজন্য উপাসনাগার থেকে তাদেরকে দূরে রাখা হত। হিন্দুধর্মেও নারীরা স্বামীহারা হলে তাদেরকেও স্বামীর লাশের সাথে জীবন্ত পুড়ে মারার জন্য বাধ্য করা হত। কোনো নারী এই আত্মহুতি না দিলে তাকে সমাজচ্যুত করা হত। খ্রিস্টজগতের বিশ্বাস ছিল, নারীরা আল্লাহপ্রাপ্তির পথে প্রতিবন্ধক। নারীদেরকে শিক্ষা দেয়া হত, তারা (Nuns) সারজীবন চিরকুমারী থাকবে। পক্ষান্তরে পুরুষরা পাদ্রী হওয়াকে গৌরবময় মনে করত। আরববিশ্বে মেয়েশিশু জন্ম নেয়াটাই ছিল অপরাধ। মা-বাবা নিজ হাতে কন্যা সন্তানকে মাটিতে জীবন্ত কবর দিত। সে সমাজে নারীরা এতটাই লাঞ্চিত ছিল যে, পুরুষ মারা গেলে তার অন্যান্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির মত তার স্ত্রী ও তারই সন্তানদের মাঝে বন্টিত হত। পরিণামে নারী আপন সন্তানের বিবাহধীন স্ত্রীর মত মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হত। আল্লাহ তার প্রিয় নবী মুহাম্মদ কে পাঠালেন ইসলাম নামক নেয়ামত দিয়ে। নবীজী আসলেন। নারীজাতির মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করলেন। ঘোষণা দিলেন, হে মানব সকল! ‘নারী' কন্যা হলে তোমার গর্ব, বোন হলে তোমার সম্মান, স্ত্রী হলে তোমার জীবনসাথী। আর মা হলে তার পদতলে তোমার জান্নাত । ”আল্লাহ তাআলা প্রত্যেককে ইসলামী অনুশাসন মেনে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের তাওফিক দান করুন- আমীন।