ক্রিকেট ঘিরে ‘বেটিং’ বা জুয়া খেলাটির মতোই পুরনো। কিন্তু, সেইসব জুয়াড়ি বা জুয়ার বুকিরা যখন খেলাটির কুশীলব অর্থাৎ, খেলোয়াড়, আম্পায়ার থেকে শুরু করে পিচ প্রস্তুতকারককে পর্যন্ত সবাইকে হাত করে পুরো খেলাটি অদৃশ্যে নিয়ন্ত্রণ করে –তখন তা প্রহসনে পরিণত হয়। তাই, আমরা মাঠে বা টিভির পর্দায় যে ম্যাচগুলো দেখি, তা অনেকাংশেই আসলে, একটা “লিখে দেওয়া” স্ক্রিপ্টের নাটক। শুধু ক্রিকেট জুয়ার ওপরে ভিত্তি করে, বাংলা ভাষায় সম্ভবত প্রথম প্রকাশিত এই বইটির প্রথম খন্ড, দুই বাংলার বেশ কিছু পাঠকের সমাদর পেয়েছে। সেই সাহসে ভর রেখে দ্বিতীয় খন্ডের অবতারণা। টি- ২০ ক্রিকেট আজকের দিনে ক্রিকেট বিশ্বের মূল চালিকা শক্তি। প্রথম খন্ডে আইপিএল এবং বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ছাড়া, প্রায় ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা ভারতে ও বিদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজী লীগগুলো নিয়ে প্রায় কিছুই আলোচনা হয়নি। দ্বিতীয় খন্ডে সেই অভাব পূর্ণ করা হয়েছে। তাছাড়া, প্রথম খন্ডে বর্ণিত জুয়ার খুঁটিনাটির তাত্ত্বিক আলোচনার পরে, এই খণ্ডে কিছু আসল ম্যাচে তার প্রয়োগ কিভাবে হয়েছে - তা তুলে ধরা হয়েছে । কিছু সাংবাদিকের অসম্পূর্ণ স্টিং অপারেশনের (অসম্পূর্ণ কারণ, আইসিসি’র সেইসব অপরাধের স্বীকৃতি দেয়নি- তাই সেগুলো অনালোচিত) তথ্যগুলো ব্যবহার করে – এই বইটি সম্ভাব্য অপরাধীদের খুঁজতে চেষ্টা করেছে বইয়ের দ্বিতীয় পর্বে। সেইসব সম্ভাব্য অপরাধে যুক্ত আছেন এমন সব শ্রদ্ধেয় ক্রিকেটার – যা পাঠককে বিস্মিত করবে। জুয়ার বাইরে বিভিন্ন অক্রিকেটিয় বিষয় – যেমন, ক্রিকেট প্রশাসনে রাজনীতির অনুপ্রবেশ ও অন্তহীন দুর্নীতির ইতিহাস, ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নির্বাচনে পর্দার পিছনের নানা কাহিনী, ম্যাচ ফিক্সিং আটকাতে আইসিসি’র তদন্ত বিভাগ ‘আকু’র সীমাবদ্ধতা, কি কৌশলে ভারতের বুকে অবৈধ জুয়ার অনলাইন সাইটগুলো চলতে থাকে অনন্তকাল - এসব নিয়ে আলাদা করে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে কিছু বিতর্কিত চরিত্র এবং বিবাদিত অক্রিকেটিয় ঘটনাও জায়গা পেয়েছে, এই খন্ডে। এছাড়াও, একটি দীর্ঘ আলোচনায় ড্রাগস- আন্ডারওয়ার্ল্ড- ক্রিকেট জুয়া, ক্রিকেটের সাথে জড়িত এক অজানা ত্রিকোণের সাথে পরিচয় হবে। ক্রিকেট জুয়া আজকের দিনে সন্ত্রাসবাদী ফান্ডিং’র একটি বড় উৎস। এটিকে অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সম্ভাব্য কি কি রাস্তা খোলা রয়েছে, আলোচনা আছে সেটি নিয়েও।