‘জীবনের গল্প গল্পের জীবন’ গ্রন্থের বিভিন্ন গল্পে আমরা সেই জীবনের সাক্ষাৎ পাই, যে জীবন আমরা বহন করে চলেছি। কিংবা সেই জীবনের প্রতিচ্ছবি প্রতিটি গল্পে চিত্রিত হয়েছে যে জীবন আমরা চাই না। আমরা অদ্ভুতভাবে লক্ষ করি, সুমনা তনু গল্পসমূহে এমন সব জীবন ও চরিত্র চিত্রায়ণ করেছেন, যে জীবন ও চরিত্রাবলি আমাদের চারপাশে বহমান; এমনকি সেই জীবন ও চরিত্রের উপস্থিতি আছে যে জীবন এবং চরিত্রের ছায়াও আমাদের কাম্য নয়। আবার কোনো কোনো গল্পে দেখি আমাদেরই প্রত্যাশিত এক জীবনগাথা। আমরা জানি, আমাদের চারপাশের জীবনে নানা ঘটনা ঘটে চলেছে। কিন্তু সেইসব ঘটনা তো আর গল্প হয়ে উঠতে পারে না। কেবল গল্প হয়ে ওঠে সেই ঘটনাসমূহ, যে ঘটনাসমূহ আমাদের প্রত্যাশিত এবং অপ্রত্যাশিত এক মোহমায়ায় আচ্ছন্ন। সুমনা তনু পেশাগত জীবনে একজন ডাক্তার। তিনি নানান মানুষের সংমিশ্রণে এসে নানা ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন হয়ত, যে ঘটনাগুলো কেবল গল্প নয়, হয়ে উঠেছে মানুষের অন্তর্গত সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, চাওয়া-পাওয়া, না-পাওয়ার যাপিত এক একটি আখ্যান। এই আখ্যানসমূহই বিভিন্নভাবে যাপিত জীবনের নানান আলোয় বয়ান করে গেছেন তিনি। ফলত, আমরা ‘জীবনের গল্প গল্পের জীবন’ গ্রন্থের প্রতিটি গল্পের অন্তেই এক অনাকাঙ্খিত অসমাপ্ত অথচ প্রত্যাশিত জীবনের প্রতিচ্ছায়া নির্মিত হতে দেখতে পাই। এখানেই এই গল্পগ্রন্থের প্রতিটি গল্প সার্থক হয়ে ওঠে। প্রত্যাশা করি, ‘জীবনের গল্প গল্পের জীবন’ বইটি পাঠকের কাছেও গৃহীত হবে সাগ্রহে।
ডা. সুমনা তনু শিলা জন্ম যশাের সদর উপজেলার পুরাতন কসবা, ঘােষপাড়া এলাকায়। বাবা মাে. জাকারিয়া আহমেদ, আবহাওয়াবিদ ছিলেন। তিনি খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনিও সাহিত্যিক ছিলেন । তার লেখা দুটি উপন্যাস ‘কৃষ্ণা’ ও ‘শেষ দেখা এবং খুলনা বেতার থেকে প্রচারিত নাটক ‘ঝড়’ সে সময়ে বেশ জনপ্রিয়তা পায়।। | ডা. সুমনা তনু শিলা যশাের সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, যশাের ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। তিনি ২৪তম বিসিএস-এর একজন কর্মকর্তা। দীর্ঘ সাত বছর তিনি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের রেজিস্ট্রার ছিলেন। তিনি ফিজিওলজিতে এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক (ফিজিওলজি) হিসেবে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে কর্মরত। | লেখিকার স্বামী অ্যাসােসিয়েট প্রফেসর ডা. মােস্তাক উদ্দিন আহমদ (এফসিপিএস-মেডিসিন, এমডি-গ্যাস্ট্রোএন্টেরােলজি) সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে কর্মরত। ব্যক্তিগত জীবনে লেখিকা দুই কন্যা এবং এক পুত্র সন্তানের জননী।। লেখিকা শখের বশেই গল্প ও কবিতা লেখা শুরু করেন, যেটা এখন নেশায় পরিণত হয়েছে। ২০১৯-এর বইমেলায় লেখিকার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘জানালা’ প্রকাশিত হয়। বইমেলা শেষ হওয়ার পর পরই বইয়ের প্রথম মুদ্রণের পাঁচশ কপি শেষ হয়। ২০২০-এর বইমেলায় প্রকাশিত হয় লেখিকার দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘ক্ষত। ক্ষত রকমারিডটকম-এ চিকিৎসক ক্যাটাগরিতে best seller হয়। পাঠকের এই ভালােবাসার কথা লেখিকা আজীবন মনে রাখবেন। ‘চা-বাগানের গােপন রহস্য ডা. সুমনা তনু শিলার প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস।