ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন নিয়ত ইতিহাসের নানা বিষয় নিয়ে লিখছেন, নতুন তথ্য/দলিলপত্র পাঠকদের সামনে তুলে ধরছেন।ইতিহাসের খেরাখেতা এ ধরনের নানা রচনার সংকলন : ফুটনোট কন্টকিত লেখা, অনুবাদ, দলিলপত্র, প্রতিবেদন বা এমন কোন রচনা যা ব্যবহৃত হতে পারে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে। এর আগে ইতিহাসের খেরোখাতার পাঁচটি খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে।এ বছর প্রকাশিত হলো ষষ্ঠ খণ্ড।বর্তমান খণ্ডে তাজউদ্দিন অহমদের ডায়েরি অবলম্বনে তাঁর জীবন ও কর্মের মূল্যায়ন করা হয়েছে একটি প্রবন্ধ।তাজউদ্দিন আহমেদ সম্পর্কে ইতোমধ্যে অন্যতম বলে বিবেচিত হতে পারে।নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে লিখছেন ‘বৈশাখ ও বাংলাদেশ।’ ভাষা আন্দোলনের হারিয়ে যাওয়া কিছু প্রচারপত্র উপস্থাপিত করেছেন।অনুবাদ, প্রতিবেদন ছাড়াও সংকলিত হয়েছে আবুদল গফফার চৌধুরীর দীর্ঘ সাক্ষাৎকার যা আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের উপাদান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।মুনতাসীর মামুনের অন্যান্য রচনার মতোই পাঠক উপভোগ করবেন সংকলিত রচনাগুলি। সূচিপত্র *তাজউদ্দিন আহমদের ডায়েরি : এক তরুণের রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠার কাহিনী *ভাষা আন্দোলনের হারিয়ে যাওয়া প্রচারপত্র *বৈশাখ ও বাংলাদেশ *বাংলাদেশের ইতিহাস হয়ত নতুন করে লিখতে হবে *পবিত্রতার উপলদ্ধি আবদুল গাফফার চৌধুরীর পাঁচদশকের স্মৃতিচারণ
মুনতাসীর মামুনের পৈতৃক বাড়ি চাঁদপুর জেলার গুলবাহার গ্রামে, কিন্তু তিনি ঢাকার ইসলামপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। সেখানেই পোর্ট ট্রাস্ট প্রাইমারি ও হাই স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা নেন। পরে ভর্তি হন চট্টগ্রাম কলেজে। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং একই বিভাগ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষাজীবনে সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলেন, কাজ করেছেন ‘দৈনিক বাংলা বিচিত্রা’য়। এছাড়াও স্বাধীনতার পর প্রথম ডাকসু নির্বাচনের সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭৪ সালে প্রভাষক পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপরই তার বিভিন্ন অনুবাদগ্রন্থ, চিত্র সমালোচনা এবং ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ইতিহাসের প্রতি তার ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে 'মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইন্সটিটিউট' প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলার ইতিহাসকে তিনি প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চান- এই উদ্দেশ্যেই মুনতাসীর মামুনের বই লেখা। একজন শিক্ষক হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন ইতিহাসবিদ ও সাহিত্যিক। ঢাকা শহর নিয়ে তার রয়েছে গবেষণাপত্র। গড়ে তুলেছেন ‘সেন্টার ফর ঢাকা স্টাডিজ’ নামের ইতিহাস চর্চার একটি প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে মুনতাসীর মামুন এর বই সমগ্র তথা ১২টি গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। মননশীল এই লেখক দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে লিখে যাচ্ছেন নানা বিষয়ে। মুনতাসীর মামুন এর বই সমূহ এর বিষয় বহুমাত্রিক। তার গ্রন্থের সংখ্যা ২২০, যাতে স্থান পেয়েছে গল্প, প্রবন্ধ, গবেষণা এবং অনুবাদ সাহিত্য। শিশু-কিশোরদের নিয়েও তার লেখা গ্রন্থ প্রশংসা কুড়িয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও তার সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। বর্তমানে এই ইতিহাসবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিষয়ের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।