তুমি কত জ্ঞানী তা বলো না বাং বলো তুমি কতটা পথ হেঁটে এসেছ। হাঁটার প্রতি এতোখানি গুরুত্ব কেন দিয়েছিলেন নবী মুহাম্মদ (দ.)? কারণ এক পা এগুলেই আমরা নতুন কিছু দেখব। নতুন অভিজ্ঞতা আমাদের জ করবে। সেইসব পদক্ষেপের অভিজ্ঞতা যদি জমা হয় একজন সুলেখকের ঝুলিতে তখন তা পৃথিবীর জন্য অনেক বেশি কল্যাণ বয়ে আনে। কারণ, লেখক তার অভিজ্ঞতার নির্যাস ছড়িয়ে দেন পৃথিবীর বাতাসে। সেই বাতাসে নিঃশ্বাস নিয়ে পৃথিবী সুস্থ হয়ে ওঠে। কাজী জহিরুল ইসলামকে চিরভ্রাম্যমান লেখক বলেছেন কবি আল মাহমুদ। তিনি সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়ান, দেখেন নানান কিছু যা একজন সাধারণ মানুষের চোখে খুব সহজেই পড়ে না। সেইসব দৃশ্য তিনি তার জাদুময় গদ্যশিল্পের তুলি দিয়ে আঁকেন গ্রন্থ-ক্যানভাসে। তেমন একটি গ্রন্থ “হিলসাইডে শিল্পের আড্ডা"। তিনি যেমন ছুটে বেড়াতে পছন্দ করেন, আবার ক্ষণিকের বিরতিতে সমমনাদের নিয়ে গড়ে তোলেন শৈল্পিক আড্ডা। নিউইয়র্কের কুইন্স কাউন্টির একটি সড়কের নাম হিলসাইড অ্যাভেন্যু। সেখানে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু বাঙালি রেস্টুরেন্ট। সেইসব রেস্টুরেন্টে কাজী জহিরুল ইসলামের উপস্থিতি এই গ্রন্থের মধ্য দিয়ে হয়ে উঠলো বাংলাসাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল। ভ্রমণ, দর্শন, সমাজচিন্তা, শিল্পের আলোচনা কী নেই এই গ্রন্থে ।
কাজী জহিরুল ইসলাম। লিখেন গল্প, কবিতা, ভ্রমণকাহিনি ও প্রবন্ধ। পেশাগত প্রয়ােজনে ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ভ্রমণ করেছেন পৃথিবীর বহু দেশ। দীর্ঘ দিন খণ্ডকালীন সাংবাদিকতা করেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযােগ্য গ্রন্থসমূহ : উড়ালগদ্য (কলাম), বিহঙ্গপ্রবণ (আত্মজৈবনিক উপন্যাস), জানা-অজানা আফ্রিকা (ভ্রমণ), গজমােতির দেশ আইভরিকোস্ট (ভ্রমণ) After a Long way (কাব্যগ্রন্থ), ছয় ঠ্যাংঅলা নীল সাপ (গল্প) ইত্যাদি। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ কবি জসীমউদ্দীন পুরস্কার ১৪০৬ এবং ভ্রমণ সাহিত্যে ড. দীনেশ চন্দ্র সেন পদক ২০০৮-এ ভূষিত হয়েছেন। বর্তমানে জাতিসংঘের একজন আন্তর্জাতিক কর্মকর্তা হিসেবে আমেরিকায় কর্মরত। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। স্ত্রী মুক্তি, পুত্র অগ্নি এবং কন্যা জলকে নিয়ে লেখক বসবাস করছেন কাব্যময় সংসারে।