আখতারুজ্জামান চিরূ'র 'কামড়' গল্পগ্রন্থটি আমাদের বাংলা গল্পাঙ্গনে এক বিরল দৃষ্টান্ত বলে আমি মনে করি। গল্পকারের বিভিন্ন গল্প রসগ্রাহীদের জন্যে সুসংবাদ হয়ে উঠবে। গ্রন্থভুক্ত কামড় গল্পটি ছোট গল্পের প্রথাগত সংজ্ঞা বহির্ভূত, প্রকার প্রকরণে ভিন্নতর এক স্বাদু গল্প। নামকরণে এ এক বিস্মৃতি বিলগ্ন স্মৃতিচারণ। প্রেক্ষাপট ১৯৬৯-১৯৭২, গণঅভ্যুত্থান থেকে স্বাধীনতা স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ। অবশ্যি গল্পকার অন্যান্য গল্পের শরীরেও রেখেছেন অনাগত কালের প্রমিত অভিক্ষেপ, রোমান্সপ্রবণ নিগুঢ় প্রেম এবং এক অশনি সংকেত। চরিত্র সবুজের প্রধানত কামড় গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র বক্তৃতাধর্মী কথামালা এবং এই কাহিনীর মধ্যে বাঁশরী নিতান্তই একটি প্রক্ষেপ। প্রক্ষেপ হলেও অবশ্যি অপরিহার্যতায় সে লেখকের দ্বৈত ভূমিকার একাংশ। আর সবুজ যেনো লেখকেরই দ্বিতীয় নাম। শব্দ চয়ন, উপমা প্রয়োগ, বাগবিন্যাসে গল্পগ্রন্থটি বাংলা গল্প সাম্রাজ্যের এক তিলোত্তমা। কাব্যময়তার বিচারে অধিকাংশ গল্প-‘গল্পিতা', নাট্যাঙ্গ নিরিখে নাট্য কাব্যিকা এবং উৎসুক দৃষ্টিতে নিরীক্ষাধর্মিতা অনুভূত হবে । গল জীবনায়নের শিলালেখ 'কামড়' গবেষণাপ্রলুব্ধ স্মৃতিদংশন সাহিত্যের এক নির্বিকার দলিল।