ইমামুল মুফাসসিরিন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি.। সম্পর্কে তিনি ছিলেন প্রিয়নবী রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চাচাতো ভাই। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র দশ বছর। এত স্বল্পবয়সী হওয়া সত্তে¡ও তাঁর জ্ঞানের পরিধি ছিল অনেক ব্যাপক ও সর্বজনবিদিত। কারণ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা তার জন্যে এ বলে দোয়া করেছিলেন যে- عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ ضَمَّنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى صَدْرِهِ وَقَالَ اللَّهُمَّ عَلِّمْهُ الْحِكْمَةَ حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ وَقَالَ عَلِّمْهُ الْكِتَابَ অর্থাৎ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তাঁর বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, “হে আল্লাহ্! তাকে হিকমত শিক্ষা দিন।” উপরোক্ত হাদিসের পরবর্তী অংশে হযরত আব্দুল ওয়ারিস রহ. হতে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বলেও দোয়া করেছিলেন যে- “হে আল্লাহ্! তাকে কিতাবের জ্ঞান দান করুন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস নং-৩৭৫৬) উল্লেখ্য, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স দশ বছর হলেও তৎকালীন সকল ধর্মীয় বিষয় তাঁর অন্তরে বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছিল। কারণ প্রিয়নবীর জীবদ্দশাতেই তিনি জ্ঞান অর্জনের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত তৎপর। ফলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর তিনি ভাবলেন, প্রিয়নবী তো এই নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে গেছেন, কিন্তু রাসুলের সান্নিধ্যপ্রাপ্ত বড় বড় সাহাবায়ে কেরাম তো এখনো বেঁচে আছেন...। সে সুবাদে তিনি বড় বড় সাহাবায়ে কেরামের নিকট হাদিসের জ্ঞান অর্জনের জন্য দূর-দূরান্তে সফর করেছেন এবং বিভিন্ন কষ্ট-ক্লেশ সহ্য করেছেন। ফলে আজ তার মর্যাদা এ স্তরে উন্নীত হয়েছে যে, আজকে তাঁকে ‘ইমামুল মুফাসসিরীন’ তথা ‘মুফাসসিরগণের ইমাম’ বলে সম্বোধন করা হয়। বর্তমান সময়ে তাফসির বিষয়ে তার চেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব দ্বিতীয়জন নেই বললেই চলে। সুতরাং তার বর্ণিত হাদিসসমূহ আমাদের জন্য অনেক বড় পাথেয় এবং শিক্ষা অর্জনের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।