রিকা গান ধরল, ‘দুঃখ আমার আমার বাসর রাতের পালঙ্ক, নিন্দা আমার প্রেমো উপহার, সাত-নরী-হার কলঙ্ক’। সাবিনা ইয়াসমিনের গানটি গাওয়ার সময় রিকা যেনো কোথায় হারিয়ে গেলো। কোন অজানা স্মৃতিতে। চোখে তার পানি। নিজ হাত দিয়ে পানি মুছিয়ে দিতে ভীষণ ইচ্ছা করলেও আশ্রয় সেটা করলো না। কারণ সে জানে তারা সেখানে গল্প করলেও দূর থেকে কিংবা আশপাশে কাছ থেকে অনেক উৎসুক দৃষ্টি তাদের দিকেই তাকিয়ে আছে। এটাই এখানকার রীতি। অকারণেই একজন আরেকজনের দিকে নজর দিয়ে রাখবেই। আর নজর দেবার মতো ভালো কিছু যদি পায় তাহলে তো আর কথায় নেই। কিছুক্ষণ নীরব থেকে রিকা আশ্রয়কে প্রশ্ন করলো, সত্যি করে বলবেন আপনি কে? আশ্রয় চমকে উঠলো। বলল, আমি কে মানে? হ্যাঁ, আপনি কে বলুন? সবার চোখ এড়ালেও আমার চোখ ফাঁকি দেয়া কিন্তু খুব কঠিন। কি যা তা বলছো? কেনো আপনি আমার জীবনে এলেন? আপনি তো দু'দিন পর চলেই যাবেন। কি করে মনে হলো আমি দুদিন পরে চলে যাবো? আমার মন বলছে। আর আমার মন যেটা বলে সেটাই সত্যি হয়। তবু চাই আপনি যান। আমার কষ্ট হলেও আপনি যান। আপনি গিয়ে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যান। আপনি মন দিয়ে চাইলেই পারবেন আমি জানি। আমার বিশ্বাস আপনি পারবেন। কেনো এতো বিশ্বাস করছো আমায়?
লিওয়াজা আক্তার যশোর জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । মা হাজী মনোয়ারা বেগম । বাবা মৃত আব্দুল মজিদ খান ছিলেন একজন সেনা অফিসার । তিন বোনের মাঝে তিনি প্রথম । বর্তমানে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন । তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাসাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন । লিখছেন গল্প, কবিতা, উপন্যাস, গান । লেখালেখির শুরু কলেজ জীবন থেকেই । যার পূর্ণতা পায় ২০১৫ সালে একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত 'লাল স্বপ্ন নীল স্বপ্ন' গল্পগ্রন্থ দিয়ে । পরবর্তীতে ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর 'ছুঁয়ে যাওয়া হৃদয়ের আকুতি' দ্বিতীয় গ্রন্থ যেটি কাব্যগ্রন্থ । ২০১৮ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা প্রথম উপন্যাস 'কাজিয়া' । তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'লিওরিকা একজন প্রাক্তন' প্রকাশিত হয় ২০২১ এর বইমেলায় এবং ২০২২ এর বইমেলায় প্রকাশিত হয় তাঁর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ 'কবির কবিতায় কল্পনা কবি' । তিনি ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বিভাজনের ঊর্ধ্বে থেকে এই সমাজকে অবলোকন করেন । চিন্তা করেন মানুষের জীবন নিয়ে; যে জীবন পৃথিবীতে একবারই আসে । সৃষ্টিশীল কিছু করার মাঝেই আনন্দ খুঁজে পান, সে কারণে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নতুন নতুন সৃষ্টির পেছনেই দৌড়ে যেতে চান । লেখা যেনও তাঁকে নেশার মতো টানে তাইতো অন্য সব পরিচয়ের চেয়ে নিজেকে লেখক পরিচয় দিতেই তিনি বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন । ছোটবেলা থেকেই দেশ বিদেশ ভ্রমনের স্বপ্ন দেখতেন । ইতোমধ্যে অনেক দেশ ভ্রমণও করেছেন । লেখক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন 'নয়নমণি কালচারাল এ্যাওয়ার্ড ২০১৫' । 'বেগম রোকেয়া সম্মাননা স্মারক ২০১৭' এবং 'আন্তর্জাতিক সোহাগী সাহিত্য সম্মাননা ২০২২' ।