খোঁজা থামিয়ে দিলেই পাবার আশা নিঃশেষ হয়ে যায়। নর্মদার সামনে বসে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে ভাবতে বাধ্য হয় রুদ্রদেব আর অসিত। সমুদ্র সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই। এখানে গুরু শিষ্যের বিষয় খাটবে না, দুজনেই নবিশ। তবু অসিতকে এগিয়ে যেতেই হবে। অঙ্গদকে উদ্ধার না করে সে ফিরে যাবে না। রুদ্রদেবও শিষ্যকে ত্যাগ করতে পারে না। শিক্ষা শেষ হবার আগে কোন গুরুই শিষ্যকে ত্যাগ করে না। ওদিকে রাহু অঙ্গদকে নিয়ে জাহাজে চেপে বসেছে। পশ্চিমে নিজের পরিচিত বন্দরের অভাব নেই। সেগুলোর একটাতে থিতু হয়ে বসেই অঙ্গদকে নিয়ে নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের পরিকল্পনা করে চলেছে সে। কিন্তু বিধির চিন্তা হয়তো অন্যরকম। রাহুর মতো লোকের তো আর পৃথিবীতে অভাব নেই। চলার পথে রাহু বুঝতে পারে, অঙ্গদের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে লোকে। কেউ কেউ তো অঙ্গদকে পাবার জন্য তার প্রাণ নিতেও পেছপা হবে না। রোমান সাম্রাজ্যের দখলে আছে পুরো গ্রীস আর ভূমধ্যসাগরের চারিদিকের অঞ্চল। রোমান সম্রাট ট্রাজানের শাসনে সাম্রাজ্যের কোথাও কোন সমস্যা মাথাচাড়া দিতে পারছে না। তবে পরাধীন গ্রীসের বাতাসে মাঝে মাঝে শোনা যায় স্বাধীনতার কানাকানি। আলেকজান্ডারের উত্তরসূরিরা নিজেদের এই অবস্থা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। নিজেদের সিংহসম সাহস মাঝে মাঝে জেগে উঠতে চায়। বিদ্রোহের লক্ষণ দেখা দেয় স্পার্টার আকাশে বাতাসে। ইভানের স্বাধীনতা নিয়ে তেমন মাথাব্যথা নেই। গ্রীসের অভিজাত সেনাদলে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে অভিজাত সুবিধা নিয়ে জীবন কাটাতে পারলেই হলো। সেই লক্ষ্যেই স্পার্টার সেরা যোদ্ধা হবার পথে এগিয়ে চলেছে সে। কিন্তু হঠাৎ করে বদলে যায় তার জীবন। প্রেম জোয়ার বইয়ে দেয় তার জীবন নদীতে। আর, প্রেম কখনোই কাউকে অবিকৃত রাখে না। স্পার্টার দুর্গম পাহাড়ে জেগে ওঠার অপেক্ষায় আছে এক অমোঘ শক্তি। টিয়ার অব এপোলোর অপেক্ষায় কাল কেটে যাচ্ছে তার। সে কি জেগে উঠবে গ্রীসের স্বাধীনতার ভাগ্যবিধাতা হয়ে? আপাত সম্পর্কহীন ঘটনাগুলো শেষে মিলে গেলো একই বিন্দুতে। মহাকালের পথে শুরু হলো এক রোমাঞ্চকর মহাযাত্রা।