যেকোনো রম্যরচনাই গোপন ক্রন্দনের উৎসার। লেখক হাসিচ্ছলে যে কথাটি লেখেন, সেটা আসলে বুক থৈথৈ বেদনারই বহিঃপ্রকাশ। কখনো কখনো তীক্ষ্ন স্যাটায়ারের নির্মম চাবুক। যেটা প্রায়শই চাবকে রক্তাক্ত করে ফেলে সময় ও সমাজের পিঠকে। সে রক্তরুধির দর্পণে প্রকৃতপক্ষে ফুটে ওঠে লেখকের নিজেরই মুখ। শফিক হাসানের রম্য আলগোছে মুখব্যাদান করে-- নিজেকেও, অন্যকেও। রম্যকার হিসেবে এদেশে শফিক হাসানের অবস্থান ঈর্ষণীয় শীর্ষস্থানীয়। যদিও কবি, গল্পকার ও সম্পাদকের স্বতন্ত্র পরিচয়ও তিনি বহন করেন। তবে রম্যরচনাতেই তার সবচে’ স্বতঃস্ফূর্ত উৎসার। গোটা ছয়-সাতেক রম্যের বই প্রকাশিত হয়েছে ইতোমধ্যে। সদ্যপ্রকাশিত রম্যগ্রন্থ একেবারেই অনাস্বাদিতপূর্ব রস সৃষ্টি করেছে--তার পূর্ব প্রকাশিত বইগুলো পড়া থাকলে সেটা অস্বীকার করার জো নেই। শফিক হাসানের-ব্যক্তিগতভাবে পাঠক হিসেবে মনে করি, শক্তিমত্তার শক্তিশালীতম প্রকাশ তার ভাষা। এমন ক্ষুরধার ভাষা তরুণ লেখকদের ভেতরে দুর্লভ। তার আরেকটি অনন্য বৈশিষ্ট্য সতর্ক, সজাগ ও উৎকর্ণ কনসাসনেস। অসঙ্গতি নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপই একজন রম্যকারের একমাত্র ইনটেনশন হতে পারে না, সেগুলোর অন্তর্গত যন্ত্রণা ও সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরাও রম্যকারের দায়িত্ব বলেই মনে করি। শফিক হাসান সে দায়িত্ব পালনে দায়িত্বশীল ভূমিকাই রেখেছেন। আমার একান্ত প্রত্যাশা--‘ইট ছুড়লে পাটকেল ফ্রি’র মতো চাবুকধর্মী স্যাটায়ারÑযেটা জান্তব, সজাগ, সতর্ক, অনুভুতিময়, নিঃশঙ্ক--ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পাক! --তৌহিদ ইমাম
জন্ম : ০২ জানুয়ারি, ১৯৮৩-তিতাহাজরা, বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী। বেড়ে ওঠা পাহাড়তলী, চট্টগ্রামে। লেখাজোখার প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। প্রথম লেখা ছাপা হয় মাসিক রহস্যপত্রিকায়। ২০০০ সালের মাঝামাঝি লেখালেখিতে সচেতনভাবে মনোযোগী হন। তার লেখা প্রকাশিত হতে থাকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিকসহ অজস্র পত্রপত্রিকায়। সমানতালে লিখেছেন লিটল ম্যাগাজিনেও। পাশাপাশি দীর্ঘদিন যাবত সম্পাদনা করছেন পাঠকপ্রিয় লিটল ম্যাগাজিন ‘প্রকাশ’। গল্প লিখতে এবং গল্পকার পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সিরিয়াস লেখার পাশাপাশি রম্য ধাঁচের রচনায়ও মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। দৈনিক প্রথম আলোর তুমুল জনপ্রিয় ফান ম্যাগাজিন আলপিন-এর মাধ্যমে রম্য লেখার সূচনা। এরপর থেকে লিখেছেন দৈনিক পত্রিকার ক্রোড়পত্র হিসেবে প্রকাশিত বিভিন্ন রম্য-বিদ্রুপ সাময়িকীতে। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা, লেখালেখি এবং সাংবাদিকতাকে। বর্তমানে একটি জাতীয় দৈনিকে সাব এডিটর পদে কর্মরত।