কিন্তু এতদিন যারা ছিল অধীনস্থ, সুযোগ পাওয়া মাত্র তারা হয়ে উঠলো জুলুমবাজ। চকিতে গাঢ় অন্ধকারে, হিম জমিতে দিশেহারার মত নামিয়ে দেয়া হল হলুনকে তার সন্তানদের সহ। বুকের শিশুটি মুখ তুলে দেখলো, তাঁবুর যে নকশার দিকে তাকিয়ে একমনে সে দুধ খেতো, তা রূপ নিয়েছে নিকষ আধারে ফুটে উঠা তারার রাজ্যে। কিন্তু, আশেপাশে কোন কুপির আলো ছিল না মায়ের মুখ দেখার জন্য। ফলে ভয় পেয়ে কেঁদে উঠে সে। হাঁটতে হাঁটতেই হলুন তার মুখে একটা স্তনবৃন্ত গুঁজে দিলেও কান্না থামায় না শিশুটি। হাতড়ে হাতড়ে মাকে খুঁজতে থাকে মায়ের কোলে শুয়েই। নিমেষে গোত্রপরিজন এর এমন বদলে যাওয়া যেন বদলে দিল তেমুজিনকেও। একটা ভঙ্গুর কাঠি থেকে সবচে কঠিন লোহায় পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলো ওই রাতেই। ক্ষমতা ছাড়া আর কিছু নেই, পৃথিবীতে ক্ষমা বলে কোন শব্দ নেই ওর কাছে। গোলগাল মুখ চৌকোনা হয়ে উঠতে থাকে, চোয়ালের হাড় ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠে। মায়ের হাত ধরে, রাতের আঁধারে একাকী অসহায় ছোট ছোট পা গুলো পাড়ি জমায় খেন্তিল পর্বতের দিকে, অবশ্য আলো থাকলেও তেমন কোন লাভ হত না, কিছুই দেখতে পেতো না ওরা। কারণ ওদের সবার চোখে পানি। ভাইবোনদের দেখে তেমুজিন। বাচ্চারা প্রায় ই হোঁচট খাচ্ছে, এমনকি আছাড় খেয়ে কপাল কনুই ও ফুলিয়েছে দু একজন। তবে, বাধ্য সৈনিকের মত, নাক মুখের নোনা তরল চাটতে চাটতে হলুনের পিছু হাঁটছে ওরা। “টেংরি, আমার সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখো।“ আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে হলুন, তার কন্ঠে কাতরতার চেয়ে ক্রোধ বেশি, কান্নার চেয়ে অবিশ্বাস বেশি।
জন্মঃ ২৩ অক্টোবর, ১৯৯৪ইং পিতাঃ মাে: হারুনুর রশিদ তালুকদার মাতাঃ রাশিদা আক্তার পূর্বপূরুষের নিবাস চাঁদপুর জেলায় হলেও চার ভাইবােনের মধ্যে সর্বজ্যেষ্ঠ লেখকের জন্ম এবং বেড়ে উঠা সিলেটের মায়াবী পরিবেশে। সিলেটের মাটির প্রতি তার অন্যরকম ভালােবাসা আছে। ছাপার অক্ষরে একাধিক পত্র-পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হলেও অলীকালােকে তার প্রথম প্রকাশিত সম্পূর্ণ একক বই। এই বইয়ের সকল ঘটনাই কাল্পনিক, তাই কাল্পনিক জগত বােঝাতে বইটির এমন নামকরণ করেছেন তিনি। তার লেখা গল্পে ভারতের আসামে ‘মিসটেক' নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে, যেটি আন্তর্জাতিকভাবে বেশ সমাদৃত হয়েছে। ব্লু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বর্তমানে ঢাকা সিটি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষে তিনি অধ্যয়ণরত।