ঊনাবংশ শতাব্দাতে পাক-ভারত উপমহাদেশে এমন কয়েকজন ক্ষণজন্মা মহান নেতার আবির্ভাব হয়- যাঁদের আন্তরিক চেষ্টায় পাক-ভারত ভূখণ্ড সুদীর্ঘ দুই শতাব্দীর পরাধীনতার শৃঙ্খলা মোচন করে স্বাধীনতা লাভ করে। এই ঐতিহাসিক দেশপ্রেমিক নেতৃসম্প্রদায়ের মধ্যে জনাব হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী অন্যতম ব্যক্তিস্বত্বা। জনাব সোহ্রাওয়ার্দী এমন একজন মানুষ, যিনি জীবনে কখনো তাঁর বংশমর্যাদা নিয়ে গর্ববোধ করেননি, বা বংশের ধ্বজা ধরে সমাজে নিজের পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেননি। তাঁর কর্ম এবং ব্যক্তিত্ব দিয়েই তিনি অনাদি-অনন্তকাল নির্যাতিত মানুষের মনে শুকতারার মতোই ভাস্বর হয়ে থাকবেন। জনাব সোহ্রাওয়ার্দীর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসার সুযোগ জীবনে আমার দুই-একবারই ঘটেছে। তবু এই অল্প সময়ের মধ্যে তাঁর সম্বন্ধে যেটুক আমি বুঝেছি, তাতে আমার মনে হয়েছে, স্বজনপ্রীতি বলে কোনো কলঙ্ক সোহরাওয়ার্দী চরিত্রকে কখনো কলুষিত করেনি। সোহ্রাওয়ার্দীর হৃদয় ছিল আকাশের মতো বিরাট, উদার, তাই তাঁর স্বজনের গন্ডি ছিল না সীমাবদ্ধ। অসহায়, অগণিত দেশবাসী ছিল তাঁর আত্মার আত্মীয়, তাদের জান-মালের হেফাজতের জন্য তিনি আমরণ বিরামহীন সংগ্রাম করে গিয়েছেন। দেশের আবালবৃদ্ধবনিতা জনাব সোহ্রাওয়ার্দী উত্তরাধিকারী। আশা করি দেশবাসী সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবেই তাঁর উত্তরাধিকারীর দায়িত্ব পালন করবেন।